বৈদ্যুতিন-বাণিজ্যের প্রধান সমস্যাগুলিকে দূর করতে উদ্যোগী কেন্দ্রীয় সরকার
বৈদ্যুতিন-বাণিজ্য বা ই-কর্মাসের অগ্রণী ক্ষেত্রে কর আরোপ এবং বিদেশি বিনিয়োগের মতো প্রধান সমস্যাগুলিকে দূর করতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শিল্প এবং বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, বৈদুতিন-বাণিজ্যে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রায় সমস্ত রাজ্যের মতামত পেয়েছেন তিনি।
তাহলে কি সব রাজ্যই বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই-কে স্বাগত জানিয়েছে? এক প্রশ্নের উত্তরে সীতারামন বলেন, “ই-কমার্স নিয়ে অবশেষে ধাতস্থ হতে পেরেছে সরকার। সমস্ত রাজ্যের মতামত নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে সমস্ত বিবেচ্য বিষয় । এখন দেখা যাক কী হয়!”
গত ১৫ জুলাই সমস্ত রাজ্যের সরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাতে আলোচনা হয় ই-কমার্সে বিদেশি বিনিয়োগ এবং কর আরোপের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে। রাজ্যগুলিকে এ বিষয়ে তাদের মতামত জানাতে বলা হয়।
বৈঠকের পর রাজ্যগুলির তরফে বর্তমান এফডিআই পলিসি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তাদের বক্তব্য, কেন্দ্র সরকারকে বৈদুতিন-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এফডিআই-এর পলিসিগত দিকগুলি নিয়ে আরও বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে। কারণ, বর্তমানে এফডিআই-এর পলিসি অনুযায়ী কোনও সংস্থাকে ক্রয় বা বিক্রয় করতে হয় কেবলমাত্র ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমেই।
পেইউ মানিহেড, চ্যানেল পার্টনারশিপ্স, পরিতোষ-এর বক্তব্য, বৈদ্যুতিন-বাণিজ্যের ধরন-ধারণ নিয়ে সুস্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। নতুন উদ্যোগপতিদের ভিতরে এ নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অনলাইন বাণিজ্যে পাইকারি এবং খুচরো ব্যবসার গতিপ্রকৃতি কেমন হবে তা সরকারকে জানাতে হবে।
বর্তমানে বি২বি ই-কমার্সের ক্ষেত্রেই একশো শতাংশ এফডিআই সম্ভব। কিন্তু খুচরো ব্যবসার ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। দেশের বৈদুতিন খুচরো ব্যবসায়ী এবং আন্তর্জাতিক খুচরো ব্যবসার মহারথীদের দাবি, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি নীতিকে আরও উদার হতে হবে।
আন্তর্জাতির ব্যবসায়ীদের কাছে চিনের পাশাপাশি ভারতও এশিয়া-পেসিফিকে একটি দ্রুত-বর্ধনশীল বাজার। ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তা এবং কম খরচে এর ব্যবহার ভারতবাসীর ক্রয়ের অভ্যাসকে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই ক্ষেত্রে বছরে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইন কেনাকাটার বাজারের বৃদ্ধির হার প্রকাণ্ড। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীদের সংস্থা সিএআইটি খুচরো বৈদুতিন-ব্যবসায় এফডিআই-এর ক্ষেত্রে কোনও রকম নীতি শীথিল করার বিপক্ষে। তাদের অভিযোগ, বৈদুতিন ব্যবসার সংস্থাগুলি এফডিআই-এর নীতিকে মানছে না।
সীতারামন জানিয়েছেন, রাজ্যগুলির সঙ্গে কর আরোপ নিয়ে আলোচনা চলছে। কর আরোপের ক্ষেত্রে কোনও সুস্পষ্ট সরকারি নীতি না থাকায়, কর সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে বৈদুতিন খুচরো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কয়েকটি রাজ্যের বাদানুবাদ দেখা দিয়েছে।