Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
ADVERTISEMENT
Advertise with us

জয় বাবা বেকারেশ্বর! বেকারদের ঈশ্বর?

দেখতে মফস্‌সলের আর-পাঁচটা ছোটোখাটো দেবস্থানের মতোই। কিন্তু নামটা দেখলে আপনি থমকে দাঁড়াবেন। 'বাবা বেকারেশ্বর'। বৃত্তান্ত শুনলে আপনার অবাক না হয়ে আর উপায় থাকবে না। বেকারেশ্বর, সত্যিই কি বেকারদের ঈশ্বর!
image


হুগলির উত্তরপাড়ার কাছে হিন্দমোটর এলাকায় এই মন্দির। বয়স পঞ্চাশ ছুঁই-ছুঁই। পাড়ার বেকারদের হাত ধরেই ছয়ের দশকে এই 'দেবতার জন্ম'। কয়েকজন বেকার যুবক গঙ্গায় স্নান সেরে ফেরার পথে একটি ভারী পাথর কুড়িয়ে আনেন। খেলাচ্ছলেই স্থাপন করেন একটি খেজুর গাছের নীচে। নাম দেন 'খেজুরেশ্বর'। তারপর স্থান বদলে, পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা হয় পাথরটি। নতুন নাম পায় সে – 'বেকারেশ্বর'। সেই থেকে চলছে বেকারেশ্বরের নিত্যপুজো। ভক্তের তালিকায় স্বভাবতই শীর্ষে এলাকার কর্মহীন যুবকেরা।

ভক্তিরস কিংবা কুসংস্কারের চেনা গল্পের মাঝে এই বার টুইস্ট! বেকারেশ্বরের মন্দির ঘেঁষেই রয়েছে একটি চা-দোকান। দোকানটির কোনো মালিক নেই। দোকান সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় এলাকারই কোনো-এক বেকার ছেলেকে। তিনি অন্যত্র কোথাও চাকরি পেয়ে গেলে, বা অন্য কোনো ব্যবসায় হাত দিলে, আরেকজন বেকারের কপাল ফেরে। দোকানের হাতবদল হয়। যেমন, গত কয়েক বছর হল দোকানটি সামলাচ্ছেন স্বপন সাহা নামে এক স্থানীয়। তিনি সরে গেলে এলাকারই অন্য আরেকটি বেকার ছেলে দোকানটির দায়িত্ব পাবেন। এই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে।

image


এরও নেপথ্যে রয়েছে একটি মজার কাহিনি। সেই যাঁরা বছর পঞ্চাশেক আগে স্থাপন করেছিলেন বাবা বেকারেশ্বরের মন্দির, সেদিনের সেই কর্মহীন যুবকদের এক বার ধারে চা দিতে অস্বীকার করেন এলাকারই এক চা-দোকানদার। সেই অপমানে সেদিনের তরুণ তুর্কিরা রাতারাতি মন্দিরের গায়েই গড়ে তোলেন এই চা-দোকানটি। ভক্তিযোগের হাত ধরে কর্মযোগ। আজও এখানে এলে দেখবেন, জল ফুটছে, ধোঁয়া তুলছে অসম কিংবা দার্জিলিং। বাবা বেকারেশ্বরের প্রসাদ।

image


জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে সেই তরুণদের বিশেষ দেরি হয়নি। পরের প্রজন্মের হাতে তাঁরা তুলে দেন ছোট্ট দোকানটি। কালক্রমে আরও হাতবদল হয়। আজও তা রমরমিয়ে চলছে। চায়ের গন্ধ অমলিন। পাশেই, নকরি ডট কমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাফ সেঞ্চুরির মুখে দিব্য রয়েছেন বাবা বেকারেশ্বরও।

(ছবি -আশিস রায়)