বর্ধমানের লেদ ব্যবসায়ীর ট্রেন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নতুন প্রযুক্তি

বর্ধমানের লেদ ব্যবসায়ীর ট্রেন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নতুন প্রযুক্তি

Thursday March 03, 2016,

2 min Read

রেল সুরক্ষায় তাক লাগানো আবিষ্কার করে আলোড়ন ফেললেন বর্ধমানের বড়শুলের এক লেদ ব্যবসায়ী। শিক্ষাগত যোগ্যতা নয়, অদম্য ইচ্ছাশক্তিই যে সাফল্যের মূলমন্ত্র তা প্রমাণ করেছেন পরেশ গাইন। ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে খুশি। এখন চাইছেন অর্থ বা চাকরির বিনিময়ে নয়, মানুষের কল্যাণে রেলকে তার প্রযুক্তি দিতে। রেল সুরক্ষায় জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রক। তার জন্য রেল বাজেটের বরাদ্দও বেড়েছে। পরেশ বাবুর দাবি, তার প্রযুক্তি ব্যবহার করলে নুন্যতম খরচে রেলের সুরক্ষা বা যাত্রী সুরক্ষা সম্ভব।

image


পেশায় লেদ ব্যবসায়ী পরেশ বাবুর পড়াশোনা বেশিদূর এগোয়নি। মাধ্যমিক পাশ করার পর একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ইলেকট্রিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন।তবে ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় রেল নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু। সেই সময় রেলের সিগনালিং ব্যবস্থার উপর একটি মডেল তৈরি করেন। পুরস্কারও পান। সেই শুরু। পড়াশোনার ফাকে কাগজ -পেন নিয়ে বসে চলতো রেল নিয়ে নানারকম নক্সা। নানা রকম পরিকল্পনা। ১৯৮৩ সালে মাধ্যমিক পাশ করার পর রেল নিয়ে তার আগ্রহ বাড়ে। এরপর গাইসাল ট্রেন দুর্ঘটনা তার মনে দাগ কাটে। তখনই ঠিক করেছিলেন, রেল দুর্ঘটনা যাতে না হয় তার জন্য কিছু একটা করতে হবে। দীর্ঘ সময় গবেষণা করে অবশেষে সফল প্রত্যন্ত গ্রাম এর হার না মানা মানুষটি।

সামান্য পুঁথিগত বিদ্যা নিয়েই অদম্য জেদ আর ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আবিষ্কার করলেন ট্রেন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নতুন এক প্রযুক্তি। তার দাবি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে, রেল লাইনে কোন ফাটল বা বিস্ফোরক থাকলে অটোসিগন্যালিং সিস্টেমের মাধ্যমে চালক তা বুঝতে পারবে। তার ফলে রেল দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে। এছাড়াও তিনি আগে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস নামে আরও একটি প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছিলেন। যার মাধ্যমে দুটি ট্রেন একই ট্রাকে চলে এলে তা সিগন্যালের মাধ্যমে অটোমেটিক দাড়িয়ে যাবে। যদিও রেল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, তা খরচ অনেক ব্যয়বহুল। পরেশ বাবুর দাবি তার প্রযুক্তি ব্যবহার করলে তা খরচ অনেক কম হবে। তিনি রেল নিয়ে আরও অনেক কিছু আবিষ্কার করেছেন এবং পুরস্কারও পেয়েছেন।

রুটি রুজির টানে সকাল থেকে হাতুড়ি দিয়ে লোহা পেটাচ্ছেন। তারই মাঝে অবসর সময়ে গবেষণা করে বের করেছেন এই ফর্মুলা। সংসারে অভাব থাকলেও অর্থ যশ খ্যাতি কোন কিছুই প্রত্যাশা করেন না তিনি। মানুষের কল্যাণে তার প্রযুক্তি নিঃশর্তে রেলকে দিতে চান পরেশ বাবু। খুব শীঘ্রই রেলমন্ত্রকের কাছে তার প্রযুক্তির ফাইল পাঠাচ্ছেন পরেশ বাবু। যদি রেল তার প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাহলে সেটাই হবে তার কাছে বড় পুরস্কার।