বাংলার চৌষট্টি খোপে দিব্যেন্দুই রাজা, মন্ত্রী, শিক্ষক
ভারতের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার। দিব্যেন্দু বড়ুয়া। বিশ্বনাথন আনন্দের পর যিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন ভারতীয় দাবাড়ু হিসেবে। তবে দাবাকে নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা বেশ বড় ছিল। দাবাড়ু হিসেবে সবধরেণর সাফল্যেরই স্বাদ চেখেছেন। জিতেছেন ওর্য়াল্ড চেস চ্যামিপয়নশিপের গোল্ড মেডেল। পেয়েছেন অর্জুন। তবু পরিচিত ছকের বাইরে গিয়েই নিজেকে পরীক্ষা করার সাহস দেখিয়েছেন।
২০০৫ সালে পথচলা শুরু দিব্যেন্দু বড়ুয়া চেস অ্যাকাডেমি। দাবা কখনই স্পেকটেটর গেম নয়। আর আজ থেক ১১ বছর আগে দাঁড়িয়ে চেস অ্যাকাডেমি শুরু করাটা নিঃসন্দেহ চ্যালেইঞ্জং ছিল। কিন্তু দিব্যেন্দু বড়ুয়ার মতে দাবা থেকে এত কিছু পেয়েছি তাই এরবাইরে অন্য কিছু করার কথা ভাবতেই পারিনি। প্রথমে স্টুডেন্ট ছিল ২১ জন।একটা ছোট জায়গা ভাড়া নিয়ে শুরু পথচলা। প্রথম প্রথম বাড়িভাড়ার টাকাটাও উঠত না। হাসতে হাসতেই বলেন দিব্যেন্দু বড়ুয়া। তবে লড়াই ছাড়েননি। চৌষট্টি খোপের লড়াইতে স্ত্রী সহেলি ধর বড়ুয়াকে পাশে নিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছেন স্বপ্নটাকে।
প্রথমে বালিগঞ্জের সেন্টার তারপর সল্টলেক। এখন তার শাখা খুলেছে দুর্গাপুরেও। আসেল এই ১১ বছরে মানুষজনের দৃষিটভঙ্গীও বদলেছে। দাবার দুনিয়ায় ভারতীয় গ্র্যান্ডমাস্টারেদর একের পর এক সাফল্য বাবা-মা দের মোটিভেট করছে ছোট ছেলে-মেয়েদের দাবা শেখাতে। পাশাপাশি দিব্যেন্দু বড়ুয়ার মতে দাবা তো শুধু খেলা নয় এতে মানসিক বিকাশও হয়। প্রথম দিনের সেই ২১ জনুএর সংখ্যাটা আজ ৩৫০ ছাড়িযেছে। প্রতিবছর নিয়ম করে চ্যামিপ্য়নশিপের আসরও বসানো হয়। এই চেস অ্যাকাডেমি ছাড়াও বিভিন্ন স্কুলের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন দিব্যেন্দু বড়ুয়া। তাঁদের সংস্থার কোচিং টিম বিভিন্ন স্কুলের পাঠ্যক্রমের সঙ্গে দাবা শেখান। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে দুর্গাপুর সেন্টারে নিয়মিত সশরীরে হাজির না থেকেও অনলাইনেও ক্লাস নেন দিব্যেন্দু। আসলে এখন কলকাতার পাশাপাশি এইধরণের বর্দ্ধিষ্ণু শহরগুলিতেও প্রচুর টার্গেট অডিয়েন্স আছেন। যাঁদের ক্যাটার করতে গেলে তাঁদের অবধি পৌঁছতেই হবে।
তবে এখানেই স্বপ্নের উড়ানকে আটকে রাখতে চাননা ভারতের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার। আরও ডানা মেলতে চান। একটা কেন্দ্র করার ইচ্ছা রয়েছ। যেখানে শুধু দাবাই শেখানো হবেনা। থাকবে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটি শেখানোর ব্যবস্থাও। ১০ কাঠা জমির ওপর চেস হাউসে চৌষট্টি খোপের স্বপ্ন বিস্তার শুরু হবে। তার আগে অবশ্য পেরোতে হবে আরও অনেক হার্ডল। চাই জমি, চাই স্পনসর। দিব্যেন্দু বড়ুয়া আশাবাদী আবারও হবে জয়..। এগোবে বাংলা। এগোবে ভারত।