কাজের সূত্রে মুম্বই এসেছেন শৈলজা। খবর পেলেন কলকাতায় মায়ের শরীর খারাপ। অসুস্থ মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার লোক নেই। চাকুরিজীবী অনিশার কাছে ফোন এল বাবার। বুকের বাঁদিকে চিনচিনে ব্যথা। কী করবেন! চিন্তা কী, বৈদ্য আছে তো!
কলকাতার নাগরিকদের এইসব সমস্যার সমাধানে ডক্টর অন কল পরিষেবা নিয়ে হাজির ওয়েব এবং অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ বৈদ্য। সংস্থার কর্ণধার নন্দিনী ফুকন। কলকাতার মেয়ে। বলছিলেন, "সময়মতো ডাক্তারের এ্যাপয়ন্টমেন্ট সংক্রান্ত নানা সমস্যায় অনেক সময়ই ডাক্তারের পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হন রোগীরা। বয়স্ক ও অসমর্থ রোগীদের ক্ষেত্রে সময়মতো ডাক্তার না দেখানোর ফলে নানা রকম জটিলতা দেখা যায়। সেই সব রোগীর সমস্যা সমাধানের ভাবনা থেকেই "বৈদ্যর " জন্ম। রোগীকে ডাক্তারের দরজায় নয় বরং ডাক্তারকে রোগীর দরজায় পৌঁছে দিতেই বদ্ধপরিকর নন্দিনী। যাতে চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি না হয়।
কিভাবে কাজ করে বৈদ্য?
আপদে বিপদে বৈদ্যর হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে বা বৈদ্যর ওয়েবসাইটে রেজিস্টার করে সমস্যা জানালেই কেল্লাফতে। আপনার এলাকায় বৈদ্যর এর এক্সপার্ট প্যানেলে নথীভুক্ত ডাক্তার সময়মতো পৌছে যাবেন দোরগোড়ায়। শুধু সার্ভিস চার্জ দিয়েই এই পরিষেবার সুযোগ নিতে পারবেন আপনি।
জেনারেল ফিজিসিয়ানদের পাশাপাশি নামী অঙ্কোলজিস্ট, নেফ্রোলজিস্টদেরও নাগালে এনেছে এই পরিষেবা।
পরিসংখ্যান বলছে ২০১৫-য় ভারতর্ষে বয়স্ক নাগরিকের সংখ্যা সতেরো কোটি ছাড়িয়েছে। তাদের জন্যে ডক্টর অন কল পরিষেবা দারুণ সুবিধাজনক। বাঙ্গালোরে এরকম পরিষেবা বেশ প্রচলিত। বাঙ্গালোরে মাসে প্রায় ষাট হাজার পরিবার এই ধরনের ডক্টর অন কল পরিষেবার সুযোগ নেন। কিন্তু কলকাতায় এখনও খুব এটা নিয়ে হই হই পড়ে যায়নি। তাই বৈদ্যর সাফল্য নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। ২০১৫ সালের অগস্টে বৈদ্য লঞ্চ করেন নন্দিনী। পরিচিত অনেকেই বলেছিলেন এসব চলবে না। কিন্তু আজ কলকাতায় বৈদ্যর সাফল্যের পর উত্তরে শিলিগুড়িতেও বৈদ্যর শাখা খোলার পরিকল্পনা করছেন নন্দিনী। বর্তমানে ডক্টর অন কলের পাশাপাশি রোগীর বাড়িতে ডায়াগনিস্টিক পরিষেবাও পৌছে দিচ্ছে এই সংস্থা। ভবিষ্যতে বাড়িতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স এবং আয়া পৌছে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁদের। ফারগুসন কলেজের কৃতী ছাত্রী দুই সন্তানের মা নন্দিনী ফুকনের পথচলা সবে শুরু। এমন এক দিনের স্বপ্ন দেখেন যখন সময়ের অভাব, পরিজনদের অনুপস্থিতিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে না।