Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
Bangla

Brands

Resources

Stories

General

In-Depth

Announcement

Reports

News

Funding

Startup Sectors

Women in tech

Sportstech

Agritech

E-Commerce

Education

Lifestyle

Entertainment

Art & Culture

Travel & Leisure

Curtain Raiser

Wine and Food

YSTV

স্টার্টআপ নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে কলেজ ড্রপআউট

স্টার্টআপ নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে কলেজ ড্রপআউট

Friday October 09, 2015,

4 min Read

শোকেসে সাজানো হরেক ইলেকট্রনিক্স সম্ভার। বেঙ্গালুরুর এসপি রোড ধরে যাওয়ার সময় দুচোখ ভরে দেখতেন বরুণ শিবরাম। চোখ যেন সরতেই চাইত না। ইলেকট্রনিক্স এখনও ঠিক একইভাবে দোলা দেয় বছর তেইশের বরুণকে। স্কুলে পড়ার সময় বাঁধাধরা পড়াশোনা একদমই ভালো লাগত না তার। টেক্সট বইয়ে নিজেকে বন্দী রাখতে কিছুতেই রাজি ছিলেন না। পড়াশোনা মানে হাতেকলমে পরীক্ষা, ভিতরে ঢুকে স্বাদ নেওয়া, কিছু সৃষ্টি করা। এটাই তার বিশ্বাস।

স্কুলের পরে কলেজে ভর্তি হওয়া। উচ্চশিক্ষার জন্য সাধারণত সবাই তাই করে থাকে।বরুণের সহপাঠীরাও কলেজে ঢুকল। বরুণ কিন্তু কলেজের খাতায় নাম লেখালেন না। ততদিনে তার মাথায় চেপে বসেছে উদ্যোগের স্বপ্ন। একটা আন্ত্রেপ্রেনারিয়াল সামিটে যোগ দেওয়ার পরে বরুণ ঠিক করলেন তিনিও স্টার্টআপ গড়ে তুলবেন। তৈরি করবেন ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র পরীক্ষার যন্ত্রপাতি। নেমেও পড়লেন কাজে। তবে তার সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হল মূলত সেভাবে মার্কেটিং করতে না পারায়। ২০১৪ সালের জুনে বেঙ্গালুরুতে একটা 3D printing ইভেন্টে বরুণের সঙ্গে আলাপ হয় কৃষ্ণার। সেইসময় স্টার্টআপ ব্যর্থতার স্মৃতি নিয়ে কৃষ্ণাও ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজছিলেন। হাতে হাত মেলালেন বরুণ আর কৃষ্ণা। সেই আলাপের সূত্র ধরেই পরবর্তীকালে দুজনের পার্টনারশিপ প্রজেক্ট CreatorBot.


CreatorBot টিমের সঙ্গে বরুণ শিবরাম (একদম মধ্যিখানে)

CreatorBot টিমের সঙ্গে বরুণ শিবরাম (একদম মধ্যিখানে)


3D printers ও manufacturing tools বানিয়ে থাকে CreatorBot. দামি নয়, কিন্তু গুণমান ভালো। এমন জিনিস যা ডিজাইনার ও আন্ত্রেপ্রেনারদের কাজে লাগবে। গড়ে তোলা হয়েছে ‘Hardware Store for Inventors’, যা সাধ্যের মধ্যে হাই-কোয়ালিটি ডিজিটাল ম্যানুফ্যাকচারিং যন্ত্র (যেমন 3D printers, CNC machines) বিক্রি করে থাকে। ডেস্কটপের জন্য মেলে বিভিন্ন সাইজের মেটিরিয়ালস। কিন্তু তাদের কাহিনি এখানেই শেষ নয়। সম্প্রতি আমেদাবাদে Makerfest-এ নজর কেড়ে নিয়েছে CreatorBot. তাদের কাজের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন Intel কর্তারা। এমনকী adapted 3D printer বানানোরও প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। বরুণ ও কৃষ্ণা যে 3D printers তৈরি করেছেন বর্তমানে রাখা রয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনের নতুন সায়েন্স মিউজিয়াম 'নবচারা কক্ষ'-এ।সম্প্রতি যে মিউজিয়ামের উদ্বোধন করেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এটা এমন এক ধরনের প্রিন্টার যার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা অশোক চক্র, জাতীয় পতাকার থ্রি-ডি মডেলের প্রিন্ট করতে পারবে। ফলে প্রযুক্তির প্রাথমিক অনেক কিছুই হাতেকলমে শিখতে পারবে তারা।


image


একবার, পাঁচবার

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তারা দুজনের যখন শুরুটা করেছিলেন, কাজটা সহজ ছিল না। মেটিরিয়ালস ও দক্ষ কাজের লোকের অভাব, এই দুই চ্যালেঞ্জ নিয়েই তাদের কাজটা শুরু করতে হয়েছিল বলে জানালেন কো-ফাউন্ডার কৃষ্ণা। প্রথম প্রিন্টার তৈরির অভিজ্ঞতা খারাপই ছিল। ঠিকঠাক যন্ত্রাংশ মিলছিল না। পাঁচবার ব্যর্থ হওয়ার পরে শেষমেশ একটা প্রিন্টার মনের মতো হল। কিন্তু আইডিয়ায় এত জোর ছিল যে তারা এতেই সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তারা বুঝেছিলেন, যখন মানুষের হাতে কাজের যন্ত্রপাতি থাকবে, যে কোনও আইডিয়া থেকেই প্রোডাক্ট তৈরি হতে দেরি হবে না। পার্সোনাল কম্পিউটিং ঠিক সেটাই করে দেখিয়েছে। জ্ঞান আর শক্তিশালী যন্ত্রপাতি, দুইয়ে মিলে তৈরি হয়েছে সফ্‌টওয়্যার। সেই সফ্‌টওয়্যার সকলের জন্য খুলে দিয়েছে অনন্ত সম্ভাবনার দুয়ার। একটা কম্পিউটার আর ক্রেডিট কার্ড থাকলেই যে কেউ একটা সফ্‌টওয়্যার স্টার্টআপ খুলতে পারেন। ঠিক এই জায়গাতেই ক্রিয়েটরবট যন্ত্রপাতির সম্ভাবনা দেখছেন বরুণ ও কৃষ্ণা। একটা ভাবনা আর সেই ভাবনাকে রূপদান করতে সহায়ক হবে তাদের সংস্থা। সাড়াও মিলছে। শুধু টেকনোলজি বা ডিজাইন কলেজ নয়, স্কুলেও নজর কেড়ে নিয়েছে তাদের তৈরি প্রোডাক্ট।

ক্লায়েন্ট রাষ্ট্রপতি ভবনও

বরুণ ও কৃষ্ণা-সহ দলে রয়েছেন পাঁচজন। জানুয়ারি থেকে প্রথম ছ'মাসে সংস্থা বিক্রি করেছে ২৯টা প্রিন্টার্স। চলতি বছরের মধ্যে তা আরও বাড়িয়ে ১০০ করতে চান তারা। সিএনসি রুটার্সের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে কমপক্ষে পঞ্চাশ। কারও আর্থিক সহায়তা না নিয়ে নিজেদের উদ্যোগে গড়ে তোলা এই সংস্থার বৃদ্ধির হার মাসিক হিসাবে ১০ শতাংশ। ক্লায়েন্টদের মধ্যে রয়েছে FabLabs, Cochin University of Science and Technology, ICICI Knowledge Park. আর হ্যাঁ, রাষ্ট্রপতি ভবনও।


রাষ্ট্রপতি ভবনে রাখা সেই প্রিন্টার

রাষ্ট্রপতি ভবনে রাখা সেই প্রিন্টার


ভারতে বাজার

২০১৯ সাল নাগাদ ভারতে 3D printing market ৪৬ মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় তিরিশ হাজার কোটি টাকা পৌঁছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতে ব্যবসা করছে বেশ কয়েকটি বিদেশি নামজাদা কোম্পানি। এরমধ্যে রয়েছে Fabbster, 3D Systems, Leapfrog, Flashforge. রয়েছে বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংস্থাও। এরমধ্যে Altem Technologies, Imaginarium, Brahma 3, KCbots, JGroup Robotics উল্লেখযোগ্য। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বাজারে নতুন ধরনের আর একটি প্রিন্টার আনার পরিকল্পনা নিয়েছে CreatorBot। মূলত ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টর ও প্রফেশন্যাল মার্কেটের দিকে নজর রেখেই এই প্রিন্টার। জোর দেওয়া হবে ফান্ডিংয়েও। সংস্থায় আরও ইঞ্জিনিয়ার নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।