দারিদ্র ঘোচাতে ইঞ্জিনিয়ার বিনোদের পোলট্রি ব্যবসা
ব্যবসা না বলে একে এক শিল্পীর শিল্পকর্ম বলাই ভালো। শিল্পীর নাম বিনোদ কাপুর। কেগফার্মের সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা। যিনি নিজের লাভের জন্য নয়, একজন ভারতবাসী হিসেবে, ভারতের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এই ব্যবসা শুরু করেছেন। তাঁর নিজের চিন্তাভাবনা, জীবনের লক্ষ্য, সব কিছু এই মানুষগুলোর মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি। ১৯৬৭ সাল থেকে ১০ লক্ষ পরিবার তাঁর আশ্রয়েই জীবন কাটাচ্ছেন।
বিনোদ ছিলেন একজন ইঞ্জিনিয়ার। যথেষ্ট সাফল্যজনক কেরিয়ার ছিল তাঁর। কিন্তু সব সময়ই তিনি নিজের মতো করে কিছু না কিছু করতে চেয়েছিলেন। গ্রামের মানুষদের জীবনে সহায়ক হতে পারে, এমন কিছু করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁর মনে হয়, যদি গ্রামের মানুষদের নিয়ে পোলট্রির ব্যবসা শুরু করা যায়, তাহলে? সময়টা ১৯৭৩ সাল। সেই সময় পোলট্রি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে স্বচ্ছ কোনও ধারণা ছিল না। বাড়ির থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে তিনি শুরু করলেন কেগফার্ম। ভারতেই তিনি হাঁস-মুরগির জেনেটিক প্রজননের অর্থাৎ হাঁস-মুরগির চাষ শুরু করলেন।
যখন কাজ শুরু করেছিলেন, তখন প্রত্যেকে বিনোদকে বোকা বলেছিলেন। কিন্তু বিনোদের নিজের কাজের ওপর ভরসা ছিল। ১৯৭৭ সালে ভারত সরকারও স্বীকৃতি দিলেন বিনোদের পোলট্রির পদ্ধতিকে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন রাজ্যে এবং শহরে ছড়িয়ে পড়তে লাগল কেগফার্মের কাজকর্ম। অনেক গরিব চাষিরা এতে উপকৃত হয়েছিল। আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে কেগফার্ম ইথিওপিয়া, উগান্ডার দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। সেখানকার সরকারই শুধু নয়, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকও বিনোদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বিনোদ জানিয়েছেন, ২২ বছর থেকে এই ব্যবসা শুরু করেছেন তিনি। আর আজ তাঁর ৭৯ বছর বয়স। অনেক ভুল করেছেন ব্যবসা করতে গিয়ে। আর সেই ভুল থেকে অনেক কিছু শিখেওছেন। বিনোদ তাঁর সাফল্যের সমস্ত কৃতিত্ব দিয়েছেন স্ত্রীকে। কারণ স্ত্রীয়ের কাছ থেকে তিনি সব সময় পেয়েছেন অকুণ্ঠ সমর্থন।