প্রথমেই বলে রাখি স্টার্টআপ সংস্থাগুলির জন্যে নতুন করে ২০১৭-১৮ সালের বাজেটে খুব কিছু আশার কথা শোনাননি অরুণ জেটলি। তবে নিরাশার কথাও নেই। লাভ পাবেন স্টার্টআপরা। আগে ছিল পাঁচ বছরের মধ্যে লাভদায় তিনটি বছরের আয়ে ছাড় পাওয়ার সম্ভাবনা। এবার পাঁচ বছরের টাইমফ্রেমটা আরও দু বছর বাড়িয়েছেন মোদি সরকার। পাশাপাশি শর্তের সামান্য অদল বদল করে স্টার্টআপদের মুখে সামান্য হাসি ফোটানোর চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র। খুশির খবর মাঝারি, ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র সংস্থার জন্যে, যাদের বার্ষিক আয় ৫০ কোটির কম, তাদের ক্ষেত্রে দেয় করে আরও ৫ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে দিতে হবে আয়ের ওপর ২৫ শতাংশ হারে কর। এর সুবিধে পাবে স্টার্টআপ সংস্থাগুলিও।
তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে উৎসাহিত করতে জেটলি সাহেব এবার বাজেটে রেখেছেন তার দাওয়াই। মাধ্যমিক স্কুল স্তর থেকেই শিশু এবং যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্ভাবনী কাজের প্রতি উৎসাহ যাতে বাড়ানো যায় তাই একটি বিশেষ ইনোভেশন ফান্ডের ঘোষণা করেছেন তিনি। পিছিয়ে থাকা গ্রামের স্কুলেও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট ক্লাসরুমের প্রচ্ছন্ন প্র্তিশ্রুতিও আছে এই বাজেটে।
এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে, আয়করে রদবদল ঘটিয়েছেন অরুণ জেটলি। যার ফলে মধ্যবিত্তরা খুশি।
বার্ষিক ২.৫-৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর এতদিন ১০ শতাংশ হারে যে দিতে হত তা এবার এক ধাক্কায় ৫ শতাংশ কমিয়ে দিলেন। ফলে ৫লাখ টাকার মধ্যে বার্ষিক আয় হলে দিতে হবে মাত্র ৫ শতাংশ কর।
শুধু তাই নয় এখন তিন লাখ টাকার নীচের রোজগেরেদের কর দিতে হবে না। যাদের রোজগার বার্ষিক ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা তাদের ১০ শতাংশ হারে প্রদত্ত করের উপর সারচার্জ দিতে হবে৷ ১ কোটির বেশি উপার্জনকারীদের ক্ষেত্রে এই সারচার্জ দিতে হবে ১৫ শতাংশ৷ আর পাশাপাশি মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্যে সুখবর শুনিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
রাজনৈতিক দলগুলির জন্যে বিশেষ ব্যবস্থার কথা ঘোষণা হল এই বাজেটে।
রাজনীতিকে স্বচ্ছ করতে এবার রাজনৈতিক দলগুলিকে বন্ড বিক্রি করার অনুমতি দিলেন অরুণ জেটলি। সাধারণ মানুষ কিংবা রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা সেই বন্ড কিনতে পারবেন ব্যাঙ্ক থেকে৷ সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলির রেজিস্টার্ড অফিসেই সেগুলো ভাঙানো যাবে৷ ফলে এই ভাবে রাজনৈতিক দলগুলি আইন সম্মত পদ্ধতিতে দল চালানোর টাকা তুলতে পারবে।
তবে চাঁদা কাটা পদ্ধতিও থাকছে। রাজনৈতিক দলগুলি কোনও একটি ব্যক্তি বা সংস্থার কাছ থেকে ক্যাশ টাকায় ২০০০ টাকার বেশি অনুদান নিতে পারবে না৷ এর বেশি অনুদান নিলে তা চেক বা ডিজিটাল মোডেই নিতে হবে৷ একই নিয়ম যেকোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এরই সঙ্গে একটি বিশেষ ঘোষণা হয়ে গেল আজ ৩ লক্ষ টাকার বেশি ক্যাশ লেনদেন করা যাবে না৷ বেশি টাকার লেনদেন হবে ডিজিটালই। ক্যাশলেস অর্থনীতির জন্যে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পাশাপাশি ফিনটেক সংস্থাগুলিও এর সুযোগ পাবে। শুধু তাই নয় ক্যাশলেস অর্থনীতিকে আরও উৎসাহিত করতে কার্ড পেমেন্টের ক্ষেত্রে ট্র্যানজাকশানে সার্ভিজ চার্জও কমানো হয়েছে।