সবার মতো করে নয়। বরং নতুন কিছু করে সবাইকে দেখিয়ে দেব এভাবেও করা যায়। এই ভাবনা থেকে ৩২ বছরের একজন অটোচালক বিস্ময়করভাবে তাঁর অটোটিতে নানা ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রেখেছেন। বলাবাহুল্য, সবটাই করা হয়েছে যাত্রীস্বার্থে। ৩২ বছরের এই অটোচালকের নাম আন্নাদুরাই। চেন্নাইয়ের এই অটোচালক থিরুভানমিয়ুর থেকে সোলিংগানালুর রুটে যে অটোটি চালান তাতে সওয়ারিরা পাবেন নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা। পরিষেবার তালিকাটা বেশ লম্বা। নিখরচায় ওয়াই ফাই, মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট, ৪০টি ম্যাগাজিন, ১০টি খবরের কাগজ, টিভি, ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট। আন্নাদুরাইয়ের নিজস্ব একটি ওয়েব সাইটও আছে। আর ফেসবুকে আছে নিজস্ব পেজ। যেটির ফলোয়ার ১০ হাজার ছাড়িয়েছে।
বিস্ময়করই বলতে হবে। অটো ভিতরে এমন আশ্চজর্য কে আর কবে দেখেছে! আন্নাদুরাই বলেছেন, বছরের পর বছর ধরে অটোগুলি একইরকমভাবে চলছে। কেউ নতুন কিছু করা নিয়ে বিশেষ ভাবেনও না। আমি চেষ্টা করেছি নিজের মতো করে পাল্টে দেওয়ার। তবে এসবের পিছনে তেমন কোনও কারণ খুঁজবেন না। আচমকা করে ফেলেছি আর কী!
তাঞ্জাভূর জেলার ছোট্ট শহর পেরাভুরানিতে জন্ম পেশায় আটোচালক আন্নাদুরাইয়ের। তাঁর চার বছর বয়সে গোটা পরিবার পাকাপাকিভাবে চেন্নাইয়ে বসবাস শুরু করে্। সাত বছর ধরে এখানে শেয়ার অটো চালাচ্ছেন আন্নাদুরাই।
আরও না্না মজা আছে আন্নাদুরাইয়ের যানে। ভ্যালেনটাইন্স ডে-তে্ যুগলে্র, মাদার্স ডে-তে মায়েদের, ফাদার্স ডে-তে বাবাদের আর চিলড্রেন্স ডে-তে শিশুরা তাঁর অটোতে চড়লে পয়সা নেন না আর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিনি পয়সায় চড়ান। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাতে তৈরি, বললেন আন্নাদুরাই। মাস্টারমশাই, দিদিমনিদের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা তাঁর।
শহরে আন্নাদুরাই একজন জনপ্রিয় মানুষ। প্রায় সকলেই তাঁকে চেনেন। ভালোওবাসেন অনেকেই। ইতিমধ্যে দুবার ভিডিওতে নিজের কাজ নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন আন্নাদুরাই। আন্নাদুরাই বলেছেন, আমি তো সামান্য অটোতে পরিবর্তন ঘটিয়েছি। আজকের দিনে অনেক কিছুই বদলাতে হবে। সেই কাজগুলি যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উন্নতির স্বার্থেই করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।