কলকাতার স্টার্টআপরা এখন Facebook Developer Circles এর বাসিন্দা
ইনভেস্টর থাকুক না থাকুক কলকাতা এখন স্টার্টআপ সিটি। শুনে মনে হতে পারে ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত গোছের কোনও স্টেটমেন্ট। কিন্তু কথাটা যে একশ শতাংশ খাঁটি, দাবি করলেন চিন্ময় সাক্সেনা। তিনি ফেসবুক ডেভেলপার সার্কেলসের প্রতিনিধি। গোটা দুনিয়ার ডেভেলপাররা এখন এককাট্টা। এক একটি জায়গায় এক একটি সার্কেল তৈরি করে ফেলেছেন ওঁরা। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকের এই কমিউনিটি সার্কেল। কলকাতাতেও তৈরি হয়েছে। চিন্ময় বলছিলেন, মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ছ'শরও বেশি প্রোগ্রামার নাম ঢুকে পড়েছেন এই কমিউনিটিতে। প্রচুর রিকোয়েস্ট এখনও পেন্ডিং। রীতিমত প্রোফাইল যাচাই করে আবেদনকারীদের এই সার্কেলে জায়গা দেয় টিম অ্যাডমিন।
![image](https://images.yourstory.com/production/document_image/mystoryimage/fbhjttpu-fbdev-pics.png?fm=png&auto=format&w=800)
বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, মুম্বাই, দিল্লির মত সব শহরেই গড়ে উঠেছে এই সার্কেল। ডেভেলপাররা এখানে নানান সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। কাজের ক্ষেত্রে কোথাও কেউ আটকে গেলে সার্কেলে পোস্ট করেন। বাকিরা ঝাঁপিয়ে পড়েন সেই সমস্যার সমাধান করার জন্যে। কিছু জানার থাকলেও একই নিয়ম। ফেসবুক ডেভেলপার কমিউনিটি স্বতঃপ্রণোদিত একটি গোষ্ঠী। সবাই সবার জন্যে সাহায্য নিয়ে সব সময় এক পায়ে খাড়া। ফলে বুঝতেই পারছেন দুর্দান্ত নেটওয়ার্কিং চলছে। কলকাতা সার্কেলের উদ্যোক্তা সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়, রুট আলফার প্রতিষ্ঠাতা পরিচয় দাস এবং অপর একটি স্টার্টআপ টুয়েলিটের সুনয়ন দাস সবাই মিলে জানালেন গ্রুপে থাকার শর্তাবলি। ওরা বলছিলেন এই কমিউনিটির ওয়ালে অবান্তর সেলস প্রোমোশন করতে পারবেন না কেউই। নিজেদের ব্যবসা বাড়ানোর কোনও ট্রিক চলবে না। Spam করা চলবে না। জেনেরিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে। গেম থেকে শুরু করে প্রোগ্রামিংয়ের কাজে কোথাও কোনও সত্যিকারের সমস্যা হলে সেই নিয়ে কথা বলা যাবে। প্রোগ্রামিং সংক্রান্ত যেকোনও নিউজ শেয়ার করা যাবে। নতুন টেকনোলজি নতুন আইডিয়া নিয়ে দেদার আড্ডা মারতে পারবেন মেম্বাররা। কেউ কোনও কিছু ডেভেলপ করলে তার লিঙ্ক পোস্ট করতে পারবেন, তার তুল্যমূল্য বিচার এবং টেস্টিং করবেন কয়েকশ ডেভেলপার। আছে একটা তুখোড় ChatBot ও। ফলে এভাবেই সম্মিলিত প্রয়াসে এগোবে প্রযুক্তি। এভাবেই আসবে উদ্ভাবনের জোয়ার। আর এসব কথা ভেবেই ফেসবুক শুরু করেছে এই আন্তর্জাতিক উদ্যোগ। কিন্তু ভীষণভাবেই হাইপার লোকাল নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে। তাই এই ডেভেলপার সার্কেলস প্রথম থেকেই হিট।
![image](https://images.yourstory.com/production/document_image/mystoryimage/ge0wrjtx-fbdev-pics2.png?fm=png&auto=format&w=800)
ন্যাসকমের অয়্যারহাউসে ৫ অগাস্ট হয়ে গেল কলকাতা সার্কেলের প্রথম মিটআপ। গিজ গিজে ভিড় ছিল সেদিন। বাইরে তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করেও হল ভর্তি তরুণ প্রজন্মের সব ডেভেলপারের ভিড়। অধিকাংশই গেম ডেভেলপ করেন। কেউ কেউ ছিলেন অ্যাপ ডেভেলপার। ফেসবুকের তরফ থেকে এসেছিলেন চিন্ময় সাক্সেনা। ছিলেন শহরেরই সফ্টঅয়্যার সংস্থা আর জে সফ্টঅয়্যারের কর্ণধার রজত অগরওয়ালা। সব্যসাচী, পরিচয় আর সুনয়ন তো ছিলেনই পাশাপাশি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন তরুণ গবেষক সোহম মণ্ডল। আর এভাবেই ফেসবুকের ডেভেলপার সার্কেলসের পথ চলা শুরু হয়ে গেল কলকাতায়।
![<b>সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়, সুনয়ন দাস এবং পরিচয় দাস</b>](https://images.yourstory.com/production/document_image/mystoryimage/33mmi5bk-pic3.png?fm=png&auto=format&w=800)
সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়, সুনয়ন দাস এবং পরিচয় দাস
চিন্ময় জানালেন আপাতত এগারোটি শহরে শুরু হচ্ছে এই ডেভেলপার সার্কেলস। কলকাতা সেই তালিকায় অন্যতম প্রধান। এবং শুরুর শুরুতেই এই বিপুল সাড়া দেখে তিনি রীতিমত উৎসাহিত। কোনও একটি শহরের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমেও এই সার্কেলের গুরুত্ব যে অপরিসীম সেকথাও বুঝিয়ে দিল অগাস্টের প্রথম ইভেন্ট। ফুড পার্টনার ছিল শহরের নতুন একটি ফুড স্টার্টআপ নাম স্যালাডিফায়েড। সংস্থার উদ্যোগপতি অরিজিত চ্যাটার্জির আত্মবিশ্বাসী অভিব্যক্তিতেই স্পষ্ট ডেভেলপার সার্কেলের ইভেন্টটা ওর ব্যবসায় একটি ব্র্যান্ডিং অপরচুনিটি এনে দিয়েছে। যত এগোবে ডেভেলপার সার্কেলস ততই এগোবে কলকাতার স্টার্টআপ কালচার। একথা হলফ করে বলা যায়।