Brands
YSTV
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
Bangla

Brands

Resources

Stories

General

In-Depth

Announcement

Reports

News

Funding

Startup Sectors

Women in tech

Sportstech

Agritech

E-Commerce

Education

Lifestyle

Entertainment

Art & Culture

Travel & Leisure

Curtain Raiser

Wine and Food

Videos

শ্রীরামপুরের স্কুলের দাওয়ায় পড়ুয়াদের প্রকৃতিপাঠ

শ্রীরামপুরের স্কুলের দাওয়ায় পড়ুয়াদের প্রকৃতিপাঠ

Monday March 21, 2016,

3 min Read

কংক্রিটের জঙ্গলে জন্ম, বাস। ওই দেখেই বেড়ে ওঠা। গাছপালা চেনা তো দূর, বিশুদ্ধ অক্সিজেনটাও যেন বাড়ন্ত। শহুরে পড়ুয়াদের এমন হাল দেখে আইডিয়াটা এসেছিল শ্রীরামপুর ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের শিক্ষকদের কয়েকজনের মাথায়। নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করে স্কুলের সামনে পড়ে থাকা এক ফালি জায়গাতেই তো গড়ে তুললেন প্রকৃতির পাঠশালা।

image


এক চিলতে জায়গা। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। আকাশের দিকে অপলক চেয়ে ঈষৎ হলুদ ফুলকপি। তার কিঞ্চিত তফাতে হাত ধরাধরি করে আছে সবুজ, লাল ক্যাপসিকাম, কাঁচালঙ্কা। কিছুটা দূরে মাটি ফুঁড়ে মাথা তুলছে আলু। টকটকে লাল টমেটোয় ভরেছে গাছ। একপাশে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে সিঙ্গাপুরি প্রজাতির ছোট ছোট কলাগাছ। এ সবের ফাঁকে ইতিউতি উঁকি মারছে নানা রঙের ফুল। শ্রীরামপুর ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন স্কুলের সামনেরটায় গেলে চোখে পড়বে এমনই ছবি।

image


গঙ্গার ধারে ঐতিহাসিক শহরটা ক্রমশই কংক্রিটের জঙ্গলে ঢেকে যাচ্ছে। নির্মল-টাটকা বাতাস এখন কার্যত দিবাস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবেশের এই দৈন্যতাই ভীষণভাবে নাড়া দেয় শ্রীরামপুরের ওই স্কুলের শিক্ষকদের। কচিকাঁচারা ধীরে ধীরে সবুজের ছোঁওয়া থেকেই বঞ্চিত হতে চলেছে। চারপাশে যেটুকু সবুজ রয়েছে তাও যেন তাদের কাছে একেবারেই অচেনা। বাড়িতে নানা সব্জি এলেও অনেক ছাত্রছাত্রী জানে না আলু গাছটা কেমন দেখতে। গাছের সবুজ টম্যাটো কী ভাবে ধীরে ধীরে লাল হয়ে যায়? মোচা কী? কাঁচকলা আর পাকা কলা আলাদা কেন? স্কুলের টিচার ইন চার্জ দেবাশিস কুণ্ডু বলেন, ‘ছোট ছোট জায়গা করে ভেষজ গাছ ছাড়াও ডাল, কন্দ, দানা শস্য জাতীয় গাছ লাগানো হবে। প্রকৃতি পাঠের পাশাপাশি হাতেকলমে নমুনা চোখের সামনে দেখতে পাবে ছাত্রছাত্রীরা।’ মিড-ডে-মিলের রান্নাঘরের পাশের জায়গায় ঔষধি গাছ লাগানো হয়। যেখানে এখন শোভা পাচ্ছে তুলসি, কালমেঘ, বাসক, অ্যালোভেরা।

image


এ সবের জন্য স্কুলের তরফে একজন বাগান বিশেষজ্ঞ শ্যামল মুখোপাধ্যায়কে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি জানান, ‘চাষে জৈব সারই ব্যবহার করা হয়। কী ভাবে ওই সার হয় তাও পড়ুয়াদের শেখানো হয়। এত রকমের গাছ আছে এখানে। কোনটা কি গাছ, ছেলেরা প্রশ্ন করে। উত্তরও পায়।’ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কথায়, ‘গ্রামের ছেলেমেয়েরা সবুজের স্পর্শে বেড়ে ওঠে। সেখানে শহরের ছেলেমেয়েরা বড় হয় ইট-কাঠ-পাথর আর পার্কের কৃত্রিমতার মধ্যে। ওরা যাতে প্রকৃতিকে চিনতে, জানতে পারে তাই আমাদের এই উদ্যোগ।’

image


শুধু নিজেদের স্কুলের পড়ুয়ারাই নয়, অন্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও যাতে এখানে এসে গাছগাছালি দেখার সুযোগ পায়, সে বিষয়েও চিন্তা-ভাবনা করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। জানা গেল, স্কুল চত্বরেই ছোট করে দু’টি জলাশয় তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন ধরনের মাছ ছেড়ে তাদের জীবনচক্রও শেখানো হবে পড়ুয়াদের।

আর কী বলছে পড়ুয়ারা? স্কুলের বাগানে ফল, সব্জি ফলতে দেখে তাদের অনুভূতিই বা কেমন? ক্লাস এইটের শিবম দাস , ক্লাস টেনের মালতি বসু, ক্লাস সিক্সের সুজয় দাস প্রত্যেকেই স্কুলের এমন উদ্যোগে অভিভূত। তাদের কথায়, ‘এতিদন শুধু বাড়িতে, বাজারে নানা সব্জি, ফল দেখতাম। সেগুলির গাছ কেমন চিনতাম না। কেউ প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে পারতাম না। এখন সব চিনি। জানতে জাইলেই ফটাফট উত্তর! মাস্টারমশায়রা আমাদের জন্য এটা যে করেছেন তাতে খুবই উপকার হল।’