Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
Bangla

Brands

Resources

Stories

General

In-Depth

Announcement

Reports

News

Funding

Startup Sectors

Women in tech

Sportstech

Agritech

E-Commerce

Education

Lifestyle

Entertainment

Art & Culture

Travel & Leisure

Curtain Raiser

Wine and Food

YSTV

ভদ্রেশ্বরের মুদিওয়ালার মেয়ে শ্বেতা IPS Topper

ভদ্রেশ্বরের মুদিওয়ালার মেয়ে শ্বেতা IPS Topper

Saturday May 14, 2016,

2 min Read

ছোট্ট শ্বেতার মুখের বোলে তখনও জড়তা কাটেনি। কেজি স্কুলের পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছিল আইপিএস অফিসার হতে চায় সে। বাড়ির একমাত্র সন্তানের ইচ্ছে গেঁথে গিয়েছিল বাবা-মায়ের মনে। সামর্থে কুলোক আর নাই কুলোক, খেয়ে না খেয়ে ‘বইপোকা’ মেয়ের পড়াশোনার খরচ যুগিয়ে গিয়েছিলেন ভদ্রেশ্বরের রবীন্দ্রনগর জিটি রোডের বাসিন্দা সামান্য মুদি দোকানদার সন্তোষ এবং স্ত্রী প্রেমা আগরওয়াল। মান রেখেছে মেয়ে। সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উনিশতম স্থানের অধিকারি আগরওয়াল পরিবারের কন্যা শ্বেতা। অভাবকে জয় করে মেয়ের সাফল্যে গর্বিত বাবা মা।

image


সন্তোষবাবুর পারিবারিক মুদির দোকান ছিল। ছোট্ট সেই দোকানের আয়ে সংসারের খরচ কুলোতো না। অভাব নিত্যসঙ্গী হলেও মেয়ের পড়াশোনায় দারিদ্যের থাবা বসতে দেননি। নিজে এইচএসের আগেই ইতি টেনেছেন, স্ত্রী প্রেমা মাধ্যমিক পর্যন্তও পৌঁছাতে পারেননি। মেয়ের মধ্যেই নিজেদের অপূরণীয় সাধ মেটানোর সব রসদ খুঁজে পেয়েছিলেন। ছোটবেলা থেকে বাবা-মায়ের সেই লড়াই দেখেছিল শ্বেতা। সেটাই ছুঁয়েছিল একরত্তি মেয়েটিকে। বাড়ির অভাব, আর্থিক কষ্টকে সঙ্গী করে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছে সে। লড়াইয়ে একটু একটু করে জয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ছাপ থাকত পরীক্ষার নম্বরে।

চন্দননগরের সেন্ট জোসেফ কনভেন্ট থেকে মাধ্যমিক, ব্যন্ডেলের অক্সিলিয়াম কনভেন্ট থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে স্নাতক। একে একে হার্ডল পেরিয়েছেন শ্বেতা। মেয়ের উচ্চশিক্ষায় অর্থ বাধা হবে না। অভয় দিয়েছিলেন বাবা। মুদিখানার ব্যবসা ছেড়ে লোহার ব্যবসা ধরেন। সাহায্য পেয়েছিলেন বহু বন্ধুবান্ধবের। এরই মধ্যে মুম্বইয়ে চাকরির অফার পান শ্বেতা। বাড়ির আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে চাকরিতে যোগ দেন। বছর না ঘুরতেই ইস্তফা দিয়ে ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন। ২০১৩-১৪ সালে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সারা দেশে ৪৯৭ নম্বরে ছিলেন। দমে যাননি। ২০১৪-১৫ সালে ফের পরীক্ষায় বসে রেঙ্কে অনেকটা এগোলেও ১৪১ নম্বরে থাকা শ্বেতা আইএএস-এ সুযোগ পাননি। আইপিএস ক্যাডার হয়ে চলে যান হায়দরাবাদে। সেখানে পুলিশ অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ চলছিল। এরই মধ্যে ২০১৫-১৬ ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেন। অবশেষে আইএএস হওয়ার স্বপ্ন সফল। ১৯ নম্বরে স্থান পেয়ে উচ্ছ্বসিত শ্বেতা সাফল্য উৎসর্গ করলেন বাবা-মাকেই।

‘এতদিন সন্তোষ আগরওয়ালের স্ত্রী বলে সবাই চিনত আমাকে। এবার শ্বেতা আগরওয়ালের মা হিসেবেও সবাই চিনবে আমাকে’, আনন্দে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি প্রেমা আগরওয়াল। চোখ মুছতে মুছতেই বললেন কথাগুলি। ‘টাকার অভাবে বাড়িতে টিভি পর্যন্ত কিনতে পারিনি।পাশের বাড়িতে দেখতে যেত বলে খুব বকেছিলাম। তারপর থেকে টিভিই দেখত না মেয়েটা। অথচ আজ ওকেই সবাই দেখছে টিভিতে’, বলছিলেন গর্বিত বাবা।

মেধাবী ছাত্রী হিসেবে শ্বেতার ঝুলিতে ইতিমধ্যেই অনেক পুরস্কার এসেছে। তবে জীবনের সেরা পুরস্কার এটাই- আইএএস পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডার শ্বেতা আগরওয়াল। প্রমাণ করে দিয়েছেন লক্ষ্যে স্থির থাকলে চাঁদও ছোঁয়া যায়।