ডাটাহাল্লী – একটি তথ্যের গ্রাম – গ্রামীণ BPO দ্বারা মহিলাদেরকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে

বর্তমানে সামাজিক চিন্তা সম্পন্ন কাজের লক্ষ্য বাড়ছে। অনেকেই চাইছেন নিজেদের মতো করে স্বাধীনভাবে কাজ করতে এবং একই সঙ্গে সমাজের ও মহিলাদের উন্নতির কথা চিন্তা করতে। ধীরে ধীরে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাচ্ছে। আগের চেয়ে এখন অনেক বেশী মেয়েরা কাজ করতে এগিয়ে আসছে। সামাজিক চিন্তা সম্পন্ন কাজকর্মের সংখ্যা আরও বাড়ছে। কোম্পানি বিল পাশ হওয়ার ফলে সামাজিক ব্যবসায়িক ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেট জগতের কাছ থেকে আরো বেশী করে সমর্থন পাওয়ার আশা করছে। CSR এর কাজকর্ম সামাজিক এই সকল ব্যবসার ক্ষেত্রে বিশেষ প্রভাব ফেলবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে। ডাটাহল্লী হল একটি গ্রামীন BPO।এই প্রোজেক্টটি শুরু হয়েছিল একটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে। বর্তমানে এটি একটি স্বনির্ভর সংস্থা। এটি শুরু হয়েছিল JSW সংস্থার দ্বারা এবং এটিই ছিল বেল্লারির বিজয়নগরের প্রথম গ্রামীন BPO মহিলা দ্বারা পরিচালিত। কন্নড়ে এর মানে হল ‘তথ্যের গ্রাম’।

ডাটাহাল্লী – একটি তথ্যের গ্রাম – গ্রামীণ BPO দ্বারা মহিলাদেরকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে

Monday September 07, 2015,

3 min Read

JSW সংস্থার CSR এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ২০০৫ সালে ডাটাহল্লীর কাজ শুরু হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল গ্রামীন সমাজের উন্নতিসাধন, মহিলাদের উৎসাহ প্রদান করা এবং শিক্ষিত মেয়েদের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে দারিদ্র দূরীকরন ও তাদেরকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা। BPO তৈরির আগে শিক্ষিত এবং কর্মক্ষম গ্রামীন মেয়েদেরকে কেবলমাত্র ঘরের কাজ করার জন্যে ব্যবহার করা হত অথবা তাদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত।

আমরা কমলেশ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম, যিনি এই বিজনেস ডেভেলপমেন্ট টিকে চালান JSoft -এ। এটি একটি JWS এর আইটি শাখা, যার সাহায্যে BPO র পদক্ষেপ সম্পর্কে আরও বেশি জানা সম্ভব।২০০৫ সাল থেকে, ডাটাহল্লীর ২ ধরনের শাখা গড়ে উঠেছে। প্রথমটি, একটি পুরোপুরি ভয়েস ভিত্তিক প্রোজেক্ট, এবং অপরটি একটি মিশ্রণ। ডাটাহল্লীর এই দুটি শাখায় বর্তমানে প্রায় ৩০০ জন মহিলা কাজ করেন। ২০০৫ সালে ভারতের একটি অন্যতম ব্যাঙ্কের চেক প্রসেসিং-এর কাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন xml/html কোডিং এর প্রোজেক্টে কাজ করা, কাস্টমার সার্ভিসে দক্ষতা অর্জন, বিভিন্ন NGO এর জন্যে টেলি-সেলস্ থেকে টাকা জোগাড় করার মতো কাজ করতে করতে ডাটাহল্লী আজ অনেক দূর এগিয়ে এসেছে। প্রাথমিকভাবে JSW ফাউন্ডেশনের টাকা থেকে CSR কাজের জন্যে তৈরী হলেও, এখন এটি একটি স্বনির্ভর সংস্থা।BPO স্টাফদের গৃহস্থালীর আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রেও একটি সরাসরি প্রভাব পড়ে। ITES এর বিভিন্ন কাজের জন্যে গ্রামীন জনগনের উপর এক ধরনের মর্যাদা ও গর্ব কাজ করে। ডাটাহল্লী মেয়েদেরকে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করে। এমনকি বিয়ের পরেও, অন্যত্র যাওয়ার পর মেয়েরা যে কোনো জায়গাতেই BPO সংক্রান্ত কাজ খুঁজে নিতে পারবে।

বর্তমানে মেয়েরা ভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টদের সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করতে পারে খুব সহজেই, সমস্যার সমাধান করতে পারে, ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে, এটা সম্ভব হয়েছে এর প্রভাবের কারনেই। ডাটাহাল্লি গ্রামের মেয়েদের গ্রুম করে তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে ITES এর কাজের দ্বারা, যাদের সাথে ক্লায়েন্টরা ব্যবসা করতে রাজি।

image


বর্তমানে গ্রামীণ BPO মডেল কেবল গ্রহনযোগ্যই হয়ে ওঠেনি, সমাজের বিভিন্ন শ্রেনির চোখে পড়ছে। কর্মরত মেয়েরা ও তাদের বাবা-মায়েরা খুবই গর্ববোধ করেন একটি মর্যাদা সম্পন্ন কাজ করতে পেরে এবং তাদের জীনবনযাত্রায় উন্নতি করতে পেরে। ইন্ডাস্ট্রির দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বলা যায়, গ্রামীণ BPO হল একটি সুপরিকল্পিত ব্যবসায়িক পদক্ষেপ। বর্তমান পরিস্থিতিকে সামনে রেখে এবং পরিবর্তনশীল সামাজিক জীবনের ক্ষেত্রে এটি একটি পরিকল্পিত ব্যবসায়িক পদক্ষেপ। এর উপর নির্ভর করে কোম্পানিগুলি টিকে থাকতে পারে ও নিজেদেরকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

“যখন আমরা নতুন নতুন কাজ শুরু করতে যাই, গ্রামের মেয়েদের কাজ শেখার ও কাজ করার উৎসাহ ও কৌতুহল-ই আমাদের কাছে মূল চালিকা শক্তি হয়ে দাঁড়ায় এই পরিবেশে এবং আমরা বুঝতে পারি যে আমরা সঠিক পথেই এগোচ্ছি। ইন্ডাস্ট্রির দিক থেকেও এটি এক রকমের সফলতা। গ্রামের মানুষদেরকে আর কাজের খোঁজে অন্যত্র যেতে হয়না। ইন্ডাস্ট্রিও তাদের কাজের জন্যে সঠিক মূল্য দিয়ে ঠিকমত শ্রমিক পায়”- জানালেন কমলেশ।

ডাটাহল্লী তাদের এই মডেলটিকে অনুকরণ করে আরও অন্যান্য গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে চায়, আরও বেশি জীবনের উপর প্রভাব ফেলতে। এবং এরা তাদের সাথে কথা বলতে রাজী যারা একই পথে এগিয়ে যেতে চায়। ডাটাহল্লী তখনই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় যখন এরা আরও বড়ো কোনও প্রজেক্টে কাজ করতে এগিয়ে যায়। ব্যবসার প্রয়োজনীয় সময় অনুযায়ী, গ্রামীন এলাকাগুলিতে এখন তারা খুবই কর্মক্ষম। এখানে তাদেরকে মূলত সময় বিনিয়োগ করতে হয় ও উৎস গুলিকে কাজে লাগাতে হয় স্কিল তৈরী করার জন্যে। এখানেই শহুরে BPO গুলি গ্রামীণ BPO-র থেকে এগিয়ে যায়। নিজেদের কলেবর বৃদ্ধি করতে এবং আরও ভালো ও কঠিন প্রোজেক্ট পেতে ডাটাহল্লী সবসময় বিনিয়োগ করে যাচ্ছে তার কর্মীদের মধ্যে, যাতে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে এটি একটি KPO তে পরিণত হতে পারে।