বিনিয়োগের সঠিক ঠিকানার খোঁজ দিচ্ছে কলকাতার ‘রুপিভেস্ট’

বিনিয়োগের সঠিক ঠিকানার খোঁজ দিচ্ছে কলকাতার ‘রুপিভেস্ট’

Tuesday November 10, 2015,

3 min Read

২০১৩ সালে বেঙ্গালুরুতে ওরাকেল সংস্থায় কাজ করার সময় বরুণ চেয়েছিলেন মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে। এজন্য একজন এজেন্টের সঙ্গেও কথাও বলেন। তাই একগুচ্ছ কাগজে সই করতে হত। বাছতে হত সঠিক বিনিয়োগের ঠিকানা। ক্রমে বরুণের মনে হতে লাগল বিনিয়োগের জন্য সঠিক সংস্থা খুঁজে বের করা আর খড়ের গাদায় সূচ খোঁজা একই। বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি দেখলেন এসব ঝামেলা এড়াতে তাঁর বন্ধুরা ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানতে টাকা রাখাকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। জীবনে চলার পথে চলে আসা সমস্যা অনেক সময়ই নতুন ভাবনার জন্ম দেয়। হঠাৎই বরুণের মনে হল দেশে সহজ লগ্নির একটা পোর্টাল খুব জরুরি। এই ভাবনাই জন্ম দিল রুপিভেস্টের। ‌যার জন্মস্থান কলকাতা।

মিউচুয়াল ফান্ড, ফিক্সড ডিপোজিট, বীমা, ঋণ , ক্রেডিট কার্ড থেকে শুরু করে যে কোনও ধরণের ফিনান্সিয়াল প্রোডাক্টকে কেন্দ্র করে গ্রাহকদের মুশকিল আসানের আরেক নাম হয়ে উঠল রুপিভেস্ট। রুপিভেস্ট গ্রাহকদের যে কোনও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত সহজে নেওয়ার রাস্তা খুলে দিল।

Team @ Rupeevest

Team @ Rupeevest


রুপিভেস্টের আইডিয়াটা মাথায় আসার পরই বরুণ ফোন করেন তার আইআইটি খড়গপুরের সহপাঠী মায়াঙ্ককে। টিমে নেন স্বেতা নামে এক তরুণীকেও। নিজেদের প্রযুক্তিগত জ্ঞানকে হাতিয়ার করে বরুণ ও মায়াঙ্ক তৈরি করে রুপিভেস্ট। যা যে কোনও মানুষকে বাজারে লভ্য ফিনান্সিয়াল প্রোডাক্ট কিনতেই শুধু সাহা‌য্যই করে না, তাঁদের জন্য কোনটা সঠিক তারও হদিস দেয়।

অতি কম কাগজপত্রের কাজে এসব ফিনান্সিয়াল প্রোডাক্ট কেনাও সহজ করে দেয় রুপিভেস্ট। রুপিভেস্টের কোনও ইউজারকে কেবল একটা রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করে পাঠাতে হয়। এরপর তিনি একটি মেল ও একটি ছাপা কাগজ পাবেন। সেই ফর্মে সই করে চাহিদামত প্রামাণ্য কাগজ পাঠালেই শেষ হবে রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি। এরপর সব কেনাকাটাই হবে অনলাইনে। ইউজারদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধার জন্য প্রতিটি ক্যাটাগরিতে কেবল সেরা দু-তিনটি ফান্ডই রুপিভেস্ট দেখায়। ‌যাতে একগাদা ফান্ডের ভিড়ে নিজের জন্য সঠিক ফান্ডটি বাছতে ইউজারদের কষ্ট করতে না হয়।

মায়াঙ্ক জানালেন, রুপিভেস্টের সাহায্যে মাত্র পাঁচ মিনিটেই পছন্দের ফান্ডে লগ্নি করতে পারবেন ইউজাররা। একবার লগ্নি করলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিস্তারিত বিবরণ অনলাইনে দেখতে পাবেন তাঁরা। এককথায় নিজের পোর্টফোলিও-র ‌যাবতীয় তথ্য ছবির মত তাঁর সামনে ফুটে উঠবে বলে জানালেন রুপিভেস্টের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ‌সবচেয়ে বড় কথা রুপিভেস্টের মাধ্যমে এত সহজে বিনিয়োগ করতে পারলেও, এজন্য ইউজারদের কাছ থেকে একটাকাও চার্জ করে না রুপিভেস্ট। কিন্তু এভাবে বিনা পয়সায় পরিষেবা দিয়ে লাভ কী? তারও উত্তর দিয়েছেন মায়াঙ্ক। রুপিভেস্টের সঙ্গে বিভিন্ন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার যোগাযোগ রয়েছে। ‌বিনিয়োগের অ্যাসেট ক্লাসের ভিত্তিতে তাদের একটা দালালি দিয়ে দেয় সংস্থাগুলি। এটাই রুপিভেস্টের রোজগার।

আপাতত রুপিভেস্টে অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্ট বা এইউএমের অঙ্ক ১০ কোটি। ‌রয়েছেন ৭০ জন ট্রানজাকশান ক্লায়েন্ট। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ক্লায়েন্টের সংখ্যা। বর্তমানে ‌দেশের যাবতীয় ফিনান্সিয়াল প্রোডাক্টকে এক ছাদের তলায় এনে তা অনলাইনেই বেচার সুবিধা ইউজারদের দিতে প্রাণপণ কাজ করছে টিম রুপিভেস্ট। খতিয়ান বলছে ২০১৯-এর মধ্যে দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন। ‌যেখানে ইন্টারনেটের সুবিধাও থাকবে। আপাতত এই খতিয়ানই ফিনান্সিয়াল সেক্টরকে নতুন আসার আলো দেখাচ্ছে। তাই সময় থাকতেই নিজেদের সবদিক থেকে গুছিয়ে নেওয়ার কাজে এতটুকু ফাঁকি দিতে চাইছেন না কলকাতায় জন্ম নেওয়া রুপিভেস্টের গোটা টিম।