পিকজি-র বাইক বাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কলকাতায়

পিকজি-র বাইক বাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কলকাতায়

Saturday September 12, 2015,

2 min Read

প্রেমিকার মান ভঞ্জনে ফুল পাঠাতে চান, কিন্তু নিজে যেতে চাইছেন না। অথবা একটা গুরুত্বপূর্ণ খাম শহরের একপ্রান্ত থেকে অতি দ্রুত অন্যপ্রান্তে পৌঁছে দিতে হবে। অথবা হয়তো, দুপুরের খাবারটা অফিসে বসেই ঘর থেকে আনিয়ে খাবেন ভাবছেন। নো চিন্তা। পিকজি তো আছে। এই স্টার্টআপ সংস্থার বাইক বাহিনী শহর কলকাতা দাপিয়ে বেডা়চ্ছে। তাদের পরিষেবায় ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে কলকাতা।

image


ব্যবসার বুদ্ধিটা প্রথমে এসেছিল সোনার ব্যবসায়ী বিকাশ জালানের মাথায়। তাঁর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি দেখেছেন যে সাধারণত কলকাতার মানুষ গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী আদান প্রদান করতে অন্যের ওপরেই বেশি ভরসা করেন। জীবন যত ব্যস্ত হয়েছে এই প্রবণতাও তত তীব্র হয়েছে। ফলে এই পরিষেবার আঙিনায় লুকিয়ে থাকা সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দিতে চাননি বিকাশ। সঙ্গে পেয়েছেন শহরেরই আরও এক ব্যবসায়ী অভিষেক জালানকে। হোটেল এবং অটোমোবাইলের ব্যবসায় সুপ্রতিষ্ঠিত অভিষেকেরও নতুন কিছু করার পোকা মাথায় গিজ গিজ করছিল। সঙ্গে পেয়ে গেলেন তাঁদেরই আরেক বন্ধু বৈভব আগরওয়ালকে। বৈভব পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং মাথা উঁচু করে স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। বিশ্বাস রাখেন আকাশটা তাঁর সীমা। শহরের এই থ্রি মাসকেটিয়ার্স খুঁজছিলেন এমন একজনকে যাঁর ভিতর নতুন কিছু করার প্যাশন আছে। যার সামনে অনাগত সময়টা অতিক্রম্য একটা চ্যালেঞ্জ। এবং সেই চ্যালেঞ্জ নিতে জুতোর ফিতে ইতিমধ্যেই বেঁধে ফেলেছেন এমন এক তরুণ তুর্কি খুঁজছিলেন বিকাশ-অভিষেক-বৈভব। আর এভাবেই সাংবাদিকতা ছেড়ে পিকজির কোর টিমে ঢুকে পড়লেন স্বপ্নশীল তরুণ আশুতোষ চৌধুরী।

image


এই চারটে স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে গেল পিকজি। মাত্র ৩ মাসেই অ্যাপ্লিকেশন চালু। অ্যান্ড্রয়েড আর আই ও এস। দুরকম প্লাটফর্মেই কাজ করে পিকজি। শুধু সামগ্রী আদান প্রদান নয়, প্রয়োজনীয় বিল দেওয়ার কাজও করে দেয় পিকজি। উবের, ওলা, ফ্লিপকার্টের সাফল্যই পিকজির অনুপ্রেরণা। প্রতিনিয়ত এই পরিষেবার চাহিদা বাড়ছে টের পাচ্ছেন আশুতোষরা।

image


দুর্গাপুজোর আগেই বাজার মাত করতে শেষ বেলার তৈয়ারি তুঙ্গে। বৈভব বলছিলেন, শুধু কলকাতা নয় গুরগাঁও এবং দিল্লির বাজারেও তাঁরা ইতিমধ্যেই উপস্থিত। এক এক করে অন্য শহরগুলোতেও ঢুকে পড়বে পিকজি। শুধু ভারতের চৌহদ্দিতে আটকে না থেকে পৃথিবীর অন্য বড় শহরেও একই পরিষেবা দেবেন। ফলে কলকাতা থেকে শুরু হওয়া এই স্টার্টআপ সংস্থা স্বপ্ন দেখছে সব থেকে বড় লজিস্টিক সলিউশন সংস্থা হয়ে ওঠার।

পাশাপাশি দেশের বেকার সমস্যা সমাধানের সামাজিক দায়বদ্ধতাও অনুভব করেন বৈভব। জানালেন, শহরে এমন বহু বেকার যুবক যুবতী রয়েছেন যারা বাইক চালাতে জানেন, সত। আমরা তাদের কাজ দিতে পারব। ইতিমধ্যেই কলকাতায় ১২০ জন বাইক চালক পিকজিতে কাজ করছেন। এই সংখ্যাটা এক লাখে পৌঁছবে খুব শিগগিরই। অন্তত এমনটাই মনে করেন বৈভব-বিকাশ-আশুতোষ। কিন্তু ওঁরা খুব ভালোভাবে জানেন, রোম একদিনে তৈরি হয়নি।