Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
Yourstory

Brands

Resources

Stories

General

In-Depth

Announcement

Reports

News

Funding

Startup Sectors

Women in tech

Sportstech

Agritech

E-Commerce

Education

Lifestyle

Entertainment

Art & Culture

Travel & Leisure

Curtain Raiser

Wine and Food

YSTV

ADVERTISEMENT
Advertise with us

গির গরু বদলে দিচ্ছে সুন্দরবনের অর্থনীতি

গির গরু বদলে দিচ্ছে সুন্দরবনের অর্থনীতি

Sunday January 17, 2016 , 3 min Read

যত্ন যতই হোক ফল তেমন মিলছিল না। একটা ইঞ্জেকশন সব বদলে দিল। গরুর চেহারা এখন দশাসই। রোজ ৬-৮ লিটার দুধ দেয়। সময় যত এগোয়, তত বৃদ্ধি হয় দুধের। গির গরুর ছোঁয়ায় এখন ‘শ্বেত বিপ্লব’ সুন্দরবনের মঠেরদিঘি, সোনাখালি, গোলাবাড়ি, গোপালপুর, তালদি, দাঁড়িয়া, দিঘিরপাড়ের মতো অঞ্চলে। গরুপালনে যারা একসময় মুখ ফিরিয়ে ছিলেন টাকা আছে জেনে তারাই এখন এই পেশায় ফিরছেন।

image


হাড় জিরজিরে সব চেহারা। খাবার ঠিকমতো দিলেও এক-দেড় কেজির বেশি দুধ হয় না। অন্যের জমিতে গিয়ে ধান নষ্ট করার অভিযোগও পোহাতে হয়। এমন অবস্থায় সুন্দরবনের গোয়ালারা গরু পালনে একসময় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিলেন। শুধু বাড়ির প্রয়োজনটুকু ছাড়া আর বিশেষ কেউ গরু পুষতে চাইতেন না। এই ঝিমিয়ে পড়া ছবিটা ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে। এর নেপথ্যে গির গাই। গুজরাতি এই গরুর দুধ দেওয়ার ক্ষমতা ঈর্ষণীয়। সাধারণ দেশি গরুকে একটি গির ইঞ্জেকশন দিয়ে তৈরি হচ্ছে গির গরু। প্রথম বাচ্চায় অবশ্য গির গরুর পঁচাত্তর শতাংশ বৈশিষ্ট্য থাকে। পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেত্রে সেটা বেড়ে সাতাশি শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। এভাবে আরও বাড়তে থাকে। ‌ঠিকমতো যত্ন নিলে দুটি গির গাই থেকে মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা রোজগার এখন সাধারণ ঘটনা।

আগ্রহের কেন্দ্রে গির

গুজরাতের সৌরাষ্ট্রে এই গরুর উৎস। একটা মহিলা গির গাইয়ের গড় ওজন ৩৮৫ কেজি। পুরুষদের ক্ষেত্রে তা ৫৪৫ কেজি। সাধারণত এদের গায়ের রং লাল। সাদা ছোপ থাকে। চামড়াও বেশ নরম ও চকচকে। কানগুলো বেশ লম্বা। সব থেকে বড় গুণ এর দুধ দেওয়ার ক্ষমতা। সেরা সময়ে এই গরু থেকে দৈনিক প্রায় ১২ লিটার দুধ মেলে। এই দুধের জোগানদারের জন্য অন্যান্য গরুর প্রজননে গিরকে ব্যবহার করা হয়। গির অভয়ারণ্যের কাছেই এ‌ই গাইয়ের যত বাড়বাড়ন্ত। গুজরাত জয় করে এখন গোটা দেশে এই গাইয়ের দারুণ কদর। প্রচণ্ড সহিষ্ণু এই প্রজাতির গরু। গরম সহ্য করতে পারে। রোগভোগও তেমন নেই। এমনকি ব্রাজিলে গিয়ে এই গাই ১৭ কেজি দুধ দিচ্ছে।

গিরের এত গুণ দেখে হরিণঘাটা, বেলগা‌ছিয়া ফার্ম থেকে এই গরু পালনে উত্সাহ দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য বিমাও পান পশুপালকরা। দিঘিরপাড়ের অমূল্য নস্করের গোয়ালে গির গাইয়ের সংখ্যা বাড়ছে। তাঁর কথায়, খাবার হিসাবে দিতে হয় গমের ভুসি, বিভিন্ন রকম দানাশস্য। তবে এই গরুকে নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হয়। তাহলে দুধ নিয়ে আর চিন্তা করতে হয় না। ওই এলাকার বাসিন্দা প্রহ্লাদ নস্করও এই গরু পুষেছেন। পেশায় প্রাণীবন্ধু প্রহ্লাদবাবু বিভিন্ন জায়গায় এই ইঞ্জেকশন দেন। দাম পড়ে ২০০ টাকা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘গির গাইয়ের সম্পূর্ণ গুণ পেতে কয়েক বছর লেগে যায়। তার আগেই দুধের জোয়ার আসে।

সুন্দরবনের লবণাক্ত আবহাওয়ায় এই গরুর তেমন কোনও সমস্যা হয় না। তাই বিভিন্ন জায়গায় পশুপালকরা গরু গাই নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’’ এর আগে অন্যান্য গরু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চললেও গির সহজেই মানিয়ে নিতে পেরেছে সুন্দরবনের মতো জায়গায়। দিঘিরপাড়ের ভবেন নস্করও গিরে মজেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই গরুর জন্য একটু যত্ন নিতে হয়। যেমন বাঁধানো ঘরে রাখতে হয়। গরমের সময় ফ্যান চালাতে হয়। গির গরুর প্রতিপালনে আমরা রোজগারের পথ পেয়েছি।’’ এই বিপুল পরিমাণ দুধ আর বাড়ির প্রয়োজনে নয়, বাইরে বিক্রি করে করে ভাল উপার্জন করছেন গোয়ালারা। সিংহের ডেরার বাসিন্দা এখন এভাবেই আপন হয়ে গিয়েছেন বাঘের ডেরা সুন্দরবনে।