নিম্নমুখী পারদের হাত ধরে ‘বাড়ন্ত’ বিনিয়োগ !
সামেনই শীতকাল। তার আগে হেমন্তের হিমেল হাওয়ায় পারদ যত নামছে ততই সম্ভাবনা কমছে ভেঞ্চার ক্যাপিটালে লগ্নির। ফুডটেক ও হাইপার লোকাল সেগমেন্টে লগ্নি করার জন্য গ্রীষ্মে লগ্নিকারীদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। অথচ শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে সেই লগ্নিকারীরাই ক্রমশ পিছিয়ে আসছেন। প্রশ্ন তুলছেন সংস্থাগুলির মুনাফার সম্ভাবনা নিয়ে। অথচ ফুডটেক নিয়ে এপ্রিলেও লগ্নিকারীদের উৎসাহের অন্ত ছিল না। মাত্র কয়েকমাসের ব্যবধানে সেপ্টেম্বরেই সেই উৎসাহ কমে গেল উল্লেখজনকভাবে। খতিয়ান বলছে ফুডটেকে সেপ্টেম্বরে মাত্র দুটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। এর মুখ্য কারণ হিসাবে অবশ্য প্রাথমিক পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ লগ্নিকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এছাড়া এই অ্যাপ নির্ভর ফুড বিজনেসগুলি দেশের কিছু কিছু জায়গায় ভাল ফল করলেও সার্বিক দিক থেকে এদের ফল আশাব্যঞ্জক নয় বলেই স্বীকার করছেন এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত শীর্ষকর্তাদের একাংশ।
শীত যত এগোচ্ছে ততই এই নতুন শুরু হওয়া সংস্থাগুলি ইউনিট ইকোনমিক্স বা মাথাপিছু বিক্রির ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করে ফেলছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। অথচ মাথাপিছু বিক্রিতে জোর দিতে গিয়ে তারা ব্যবসার বৃদ্ধি, ভবিষ্যত লক্ষ্য এসব বিষয়গুলিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এতে আখেরে তাদের সম্বন্ধে বিনিয়োগকারীদের ধারণাই খারাপ হচ্ছে। টাকা ডুবে যাওয়ার ভয়ে তাঁরা এসব সংস্থায় বিনিয়োগ করার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।
ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়া, কর্মী ছাঁটাই এখন ফুডেটক বা হাইপার লোকাল সেগমেন্টের স্বাভাবিক প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন সংস্থাগুলি চালু হয়েছিল তখন লগ্নিকারীরা কিছুটা বাজি ধরেই এখানে টাকা ঢেলেছিলেন। এখন তাঁরা সেই অতিরিক্ত লগ্নিগুলিকে ছেঁটে ফেলতে চাইছেন। ফল হচ্ছে মারাত্মক। লগ্নি বন্ধ হওয়ায় অনেক নামী দামী সংস্থাই বন্ধের পথে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে। অনেকে আবার হোম ডেলিভারির মত নানা পরিষেবা কাটছাঁট করে বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছে। ‘টাইনিআউল’ নামক একটি সংস্থা তাদের ৬০০ জন কর্মীকে হালে ছাঁটাই করেছে। ‘হেল্পচ্যাট’ সংস্থাটি অক্টোবরেই ১৫০ জন কর্মী ছাঁটাই করেছে। এমনকি ‘জোমাতো’র মত প্রথমসারির সংস্থাও তাদের বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কর্মীদের মধ্যে ৩ হাজার জনকে ছাঁটাইয়ের নোটিস ধরিয়েছে।
ইয়োরস্টোরি তাদের নিয়মমত কখনও অনুমানের ভিত্তিতে কিছু বলার ঝুঁকি নেয় না। কিন্তু হঠাৎ করে যেভাবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নিস্পৃহতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে অনুমানের যথেষ্ট খোরাক রয়েছে। অনেক আশা জাগিয়ে এপ্রিলে যেসব সংস্থা বা নতুন উদ্যোগ পথ চলা শুরু করেছিল, শীতের মুখেই তারা বড় ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হওয়া অবশ্যই সকলকে অবাক করল।