Euor Health কলকাতায় চালু করল প্রথম ক্লিনিকটি
গোটা পূর্বভারত জুড়ে ইয়োর হেলথ চালু করতে চলেছে ৬৫টি ক্লিনিক। যে ক্লিনিকগুলিতে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগীর চিকিৎসা করবেন স্বল্প খরচে। ২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৫০ টাকার ভিতর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরিষেবা নিতে পারবেন সাধারণ মানুষ। পূর্বভারতে যে ক্লিনিকগুলি চালু হতে চলেছে তার ভিতর ৩০টি ক্লিনিকই পশ্চিমবঙ্গে হবে। ইয়োর হেলথের প্রথম ক্লিনিকটি চালু হল কলকাতার বালিগঞ্জে। এখানে নিয়মিতভাবে বসবেন ৭০ থেকে ৮০জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। থাকছে চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবস্থাও। নাম নথিভূক্ত করার জন্যে লাগবে সামান্য টাকা।
অনেকক্ষেত্রেই খুব জরুরি দরকারের সময় চিকিৎসক পাওয়া যায় না। রোগী ও তাঁর পরিজনদের ভোগান্তির অন্ত নেই।সময়মতো হাতের কাছে পাওয়া যায় না অ্যাম্বুল্যান্সও। এও এক বিরাট সমস্যা। তাছাড়া, সাধারণ মানুষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে পরামর্শ নিতে পারেন না প্রধানত আর্থিক কারণে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানোর ফিজ এখনও বহু মানুষের নাগালের বাইরে। চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে এমন অজস্র অভিযোগ প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে মানুষকে রেহাই দিতে এগিয়ে এসেছে ইয়োর হেলথ। ইয়োর হেলথ একটি স্টার্ট আপ সংস্থা। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সুদীপ কুমার মুখোপাধ্যায় এক বাঙালি তরুণ। বেনারসে বড় হয়ে ওঠা সুদীপ ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করার পরে কয়েকটি কর্পোরেট সংস্থায় কাজ করেছেন। কিন্তু, চাকরি-বাকরিতে মন টেঁকেনি। স্বপ্ন দেখছিলেন নিজে বড় কিছু করার – যাতে সাধারণ মানুষের উপকারে লাগতে পারেন। ২০১৫ সালে সেই স্বপ্ন বাণিজ্যিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে। স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত এই পোর্টালটিই এ বিষয়ে এদেশের প্রথম পোর্টাল। সুদীপের মস্তিষ্কপ্রসূত ওই স্বপ্নটি একজন তরুণ উদ্যোগপতি হিসাবে সুদীপকে প্রশংসিত করেছে বিভিন্ন মহলে। প্রধানত ইন্টারনেট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে এই পরিষেবা নেওয়া যায়। এঁদের সঙ্গে গাঁটছরা বেঁধেছে ওলার মত সংস্থাও।
পোর্টালটি বাজার সফল হওয়ার পরে আরও বড় স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন সুদীপ। তারই ফলশ্রুতিতে বালিগঞ্জে ইয়োর হেলথের প্রথম ক্লিনিকটি আলোয় এল। ইয়োর হেলথের সিইও সুদীপ কুমার মুখোপাধ্যায় জানালেন তাঁর হাতে গড়া সংস্থা পরবর্তী সময়ে ঠিক কী করতে চলেছে। সুদীপ বললেন, "ইতিমধ্যে কলকাতার ৪০টি হাসপাতালের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছি আমরা। ওই হাসপাতালগুলিতে তুলনামূলকভাবে স্বল্প খরচে মানুষের চিকিৎসা ছাড়াও বাজারের তুলনায় কম খরচে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থাও আমরা করব। আমাদের আসল উদ্দেশ্য হল সাধারণ মানুষের কাছে উৎকৃষ্ট মানের চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। গোটা দেশের ১১০০জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আমাদের সঙ্গে যুক্ত।"
সুদীপের উদ্যোগ যে অত্যন্ত সাধু তা সন্দেহাতীত। গোটা পূর্বাঞ্চল জুড়ে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে জাল ফেলছেন সুদীপ। কিন্তু, গ্রামের মানুষ কি ইয়োর হেলথের কোনও পরিষেবা পাবেন না?
সুদীপ বললেন, আসলে ইয়োর হেলথ প্রযুক্তিনির্ভর। ইন্টারনেট বা অ্যাপের মাধ্যমে কাজ করেছে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে তাই আমরা এখনও পৌঁছতে পারিনি। তবে সে ব্যাপারেও চেষ্টায় আছি। পূর্ব মেদিনীপুরের কণ্টাইতে আমরা কল সার্ভিস সেন্টার চালু করেছি। এ ধরনের সেন্টার আগামী কিছুদিনের ভিতর বীরভূমেও চালু করতে চলেছি।
সকলের জন্যে স্বাস্থ্য। এই হল ইয়োর হেলথের মূল স্লোগান। বালিগঞ্জের ক্লিনিকটি উদ্বোধনেও ছিল অভিনবত্ব। স্থানীয় বস্তিবাসী মেধাবী দুই পড়ুয়াকে দিয়ে ক্লিনিকটির উদ্বোধন করানো হল।
এদিন সুদীপ তাঁর সংস্থার পরবর্তী পরিকল্পনাগুলি নিয়ে জানিয়েছেন। রোগীর পরিজনরা বহুক্ষেত্রে দরকারের সময় হাতের কাছে অ্যাম্বূল্যান্স না পেয়ে হা-হুতাশ করেন। সেই সমস্যা দূর করতে আর কিছুদিনের ভিতর ওরাই কলকাতায় আনছেন মেডি-ট্যাক্সি। সুদীপ বললেন, মেডি-ট্যাক্সি অ্যাম্বুল্যান্সের বিকল্প হিসাবে কাজ করবে। অ্যাম্বুল্যান্সে যে ধরনের পরিষেবা মেলে মেডি-ট্যাক্সিতেও ওই পরিষেবা পাওয়া যাবে। স্বাগত সুদীপ। স্বাগত সুদীপের ইয়োর হেলথ।