গোটা দুনিয়া দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কলকাতার Ideal Analytics
যে কোনও ব্যবসার ক্ষেত্রে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ডেটা অ্যানালিটিকসের ভূমিকা। ব্যবসার অগ্রগতি, দুর্বলতা, উন্নতির সুযোগ ইত্যাদি বুঝতে অ্যানালিটিকস বা তথ্য বিশ্লেষণ অপরিহার্য। সারা বিশ্বজুড়েই চাহিদা বাড়ছে ডেটা অ্যানালিটিক্যাল টুলের। বিভিন্ন ধরণের কোম্পানির নির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন প্রডাক্ট, আর তাকে ঘিরেই শুরু হচ্ছে নানা স্টার্টআপ।
এই ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য নাম আইডিয়াল অ্যানালিটিকস সলিউশন। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে যাত্রা শুরু কলকাতার এই বিজনেস অ্যান্ড ডেটা অ্যানালিটিকস কোম্পানির। কোম্পানির কর্পোরেট হেড কোয়ার্টার কলকাতার সল্টলেক অঞ্চলে। ইউরোপিয়ান অফিস ফ্রান্সের প্যারিসে, এছাড়াও সারা পৃথিবী জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে শাখা দফতর। কন্টিনেন্টাল ইউরোপ, মধ্য প্রাচ্য, ও APAC এর দেশগুলিতে একটি পরিচিত নাম আইডিয়াল অ্যানালিটিকস সলিউশন. কাজ শুরু হয়েছে ইউএসএতেও।
প্রযুক্তি সংক্রান্ত পেশায় যুক্ত ও দীর্ঘদিন এক সঙ্গে কাজ করার পর সংস্থাটি শুরু করেন সঞ্জয় চ্যাটার্জি, শশাঙ্ক শেখর ঘোষ, ফ্রেডরিক তোর্জা এবং সুকুমার চক্রবর্তী। সঞ্জয় ও শশাঙ্ক শেখরের পড়াশোনা খড়গপুর আইআইটিতে, সুকুমার পড়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও আইএসআই থেকে। ফ্রেডরিকের পড়াশোনা ফ্রান্সে।
কথা হচ্ছিল সঞ্জয় চ্যাটার্জির সঙ্গে, বললেন, “অ্যানালিটিকসের একটা বড় বাজার রয়েছে বিশ্বজুড়ে। আমরা নিজেরা প্রোডাক্ট তৈরি করি। প্রেডিক্টিভ ও প্রেসক্রিপটিভ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ব্যবসাদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাহায্য করি আমরা।
তাঁদের অভিজ্ঞতা বলছিল আগমী দিনে ব্যবসার মূল অক্ষই হয়ে উঠবে অ্যানালিটিকস। অ্যানালিটিকস ঘিরেই আবর্তিত হবে যেকোনও ব্যবসা। কিন্তু বিশ্বের বাজারে সহজে ব্যবহার যোগ্য অ্যানালিটিকস প্রডাক্টের অভাব রয়েছে। সেখান থেকেই ভাবনা শুরু আইডিয়াল অ্যানালিটিকস সলিউশনের”। ব্যক্তিগত স্তরে বড় ধরণের ডেটা নিয়ে কাজ করার জন্য এমন প্রডাক্ট তারা বানাতে শুরু করেন যা ক্লাউডে স্টোর থাকে ও যেকোনও জায়গা থেকেই ব্যবহার করা যায়। “আমরা এমন প্রডাক্ট-টুল তৈরি করতে চাইছিলাম যা নাম মাত্র দামে গ্রাহকরা ব্যবহার করতে পারেন, সব ধরণের প্রয়োজনীয় কাজ যাতে হয়” বললেন সঞ্জয়। ফ্রি ট্রায়ালেরও ব্যবস্থা রয়েছে তাদের।
“কলকাতার মত শহর থেকে শুরু করতে সময় লাগে, কিন্তু আমাদের টিমে খুবই দক্ষ ডেটা সায়েন্টিস্ট, ইঞ্জিনিয়ার আর আর্কিটেক্ট ছিল, আর তাই আমাদের বিশ্বাস ছিল আমরা সর্ব সেরা হয়ে উঠতে পারব। পরবর্তী কালে আমাদের বিশ্বাস সত্যি প্রমাণিত হয়েছে”, বললেন সঞ্জয়। “আমাদের যাত্রাপথ যদি দেখেন দেখবেন তা খুবই রোমাঞ্চকর ও আকর্ষণীয়”।
গ্রাহক ও পার্টনারদের সহযোগিতা,সমালোচনা, পরামর্শ ও আস্থাই আইডিয়াল অ্যানালিটিকসের বেড়ে ওঠার পাথেয় বলে জানালেন সঞ্জয়। বললেন, “এই পুরো সময় জুড়ে আমাদের প্রডাক্টগুলি যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে সেটা লক্ষ্য করলেই এটা বোঝা যাবে। বর্তমানে প্রেসক্রিপটিভ অ্যানালিটিকসের জন্য ম্যাচ্যুরিটি মডেল নলেজ ইঞ্জিনে তৈরির কাজে দ্রুত এগোচ্ছে আইডিয়াল অ্যানালিটিকস”।
ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ জোগাড় করাই সবথেকে কঠিন চ্যালেঞ্জ থেকেছে তাঁদের। তবে দক্ষ ও পরিশ্রমী টিম, কারও ছেড়ে না যাওয়া ইত্যাদিই শক্তি যুগিয়েছে এগিয়ে যেতে এবং আগামী দিনেও এটিই তাঁদের বড় শক্তি বলে মনে করে টিম আইডিয়াল অ্যানালিটিকস।
ভবিষ্যতের লক্ষ্য বলতে এই ব্যবসায় এক নম্বর হওয়া। পরিকল্পনা, নলেজ ইঞ্জিন ভিত্তিক প্রেডিকটিভ, প্রেসক্রিপটিভ অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা যা ডেটা সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এখন অবধি অজানা প্রশ্নের উত্তর সব থেকে ভাল ভাবে দিতে পারবে।