“ইন্টারনেটই কোটি কোটি মানুষের কাছে প্রযুক্তির সুবিধে পৌঁছে দিতে পারবে” বললেন এম ভি পাই
“বর্তমান সময়ে অন্যতম যুগান্তকারী একটি বিষয় হল ইন্টারনেট” - সবার কাছে প্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সূচনা হল এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে। এরকম এক উদ্যোগের এর চেয়ে উপযুক্ত সূত্রপাত আর কি-ই বা হতে পারত?
“শিগগিরই সাতশো কোটি মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে সংযোগের আওতায় চলে আসবেন” – ‘টেকস্পার্ক’ ৬ এর উদ্বোধনী অভিভাষণে এমনটাই বলেন টি.ভি. মোহনদাস পাই। তিনি আরও বলেন যে আজকের দিনে শুধুমাত্র একটা মোবাইল ফোন এবং ওয়াইফাই থাকলেই মুহুর্তের মধ্যে দুনিয়াকে এনে ফেলা যায় হাতের মুঠোয়।
আজকের দুনিয়ায় সংযোগের ক্ষেত্রে কোনওরকমের বাধা নেই। “আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কিংবা ‘মেশিন লার্নিং’ কিন্তু নিছক অবাস্তব কিংবা কল্পকথা নয়” যোগ করলেন তিনি।
সময়রেখা ধরে পিছিয়ে যাওয়া যাক অনেকগুলো বছর
আজকের দুনিয়াকে আমরা যেমনভাবে দেখছি, আগামী দশ বছরে তা অনেকটাই বদলে যাবে। নিজের মতামত স্পষ্ট করবার জন্য মোহনদাস পাই টেনে আনলেন ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ – “দুশো বছর আগেও আমাদেরকে মানুষের শারীরিক শক্তির উপর নির্ভর করে থাকতে হত। পিরামিড এবং অন্যান্য মহতী সব স্থাপত্যকীর্তির নির্মাণ সম্ভব হয়েছিল মানুষের পেশিশক্তির উপর ভর করেই”।
কিন্তু হঠাৎ করেই মানুষ একদিন আয়ত্ত করে নিল নিজের প্রয়োজনে বাষ্পচালিত ইঞ্জিনের ব্যবহার, বললেন তিনি। “আগে যে কাজ করতে একশো মানুষের প্রয়োজন হত, এখন সেটা একজনের পক্ষে করা সম্ভব হয়ে উঠল”। এবং এটাই বদল আনল দুনিয়ার চালচিত্রে, বললেন মোহনদাস পাই। এটা হয়ে উঠল কাজের গতি ও চালিকাশক্তির উৎস। রেল পরিবহন ব্যবস্থার দৌলতে দূর আর দূর রইলনা, গড়ে উঠল বিভিন জায়গার মধ্যে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা। এবং এইটাই আবার সাহায্য করল শিল্পবিপ্লবে। গড়ে উঠল কলকারখানা, শুরু হল ব্যবসা-বাণিজ্য।
একটা বড়সড় রদবদল চলছে এখন
মোহনদাস পাই এর মতে এককথায়, এই বদলটা হল ইন্টারনেট। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে এটা ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে একথা যেমন সত্যি, তেমনই এটাও বাস্তব যে আজকে এই ইন্টারনেটের সাহায্যে সারা দুনিয়ার মানুষ, তা সে বিশ্বের কোনও প্রত্যন্ত অঞ্চলেরই হোক না কেন, তারাও চলে এসেছেন একটা সাধারণ সংযোগ ব্যবস্থার আওতায়, বললেন তিনি। এর ফলে মানুষ সহজেই তথ্য সংগ্রহ করতে পারছে, ব্যবসা-বানিজ্য সম্ভব হচ্ছে এবং সমস্ত মানুষ যুক্ত হতে পারছেন একটা সাধারণ বাজার ব্যবস্থার সাথে। ইন্টারনেটের সুবাদে জ্ঞান ও তথ্য আহরণ আজ শুধু একটা মাউস-ক্লিক করার অপেক্ষা মাত্র, জানালেন তিনি।
“এখনকার দিনে আর তথ্য গোপন করা সম্ভব নয়। টুইটার বিপ্লব সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নকে সম্ভব করে তুলছে।” সাধারণ মানুষকে এটা স্বর দিয়েছে।
গড়ে উঠছে দুনিয়াব্যাপী পারস্পরিক সংযোগ
একাধিক যন্ত্র ও প্রযুক্তির গড়ে ওঠা সম্ভবপর হয়েছে এই ইন্টারনেটের দৌলতেই। মোহনদাস পাই এর মতে, ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের ক্ষেত্রেই এটা ব্যবসায়িক স্বচ্ছতাকে এক অন্য পর্যায়ে উন্নীত করেছে।
কারণ দুনিয়ার কোথায় কোন পণ্য বা কি ধরনের পরিষেবা পাওয়া যায়, ক্রেতারা সহজেই সেটা জানতে পারছেন এবং ব্যবসায়ীদের সুবিধা হয়েছে ‘সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট’ এর ক্ষেত্রে। “আজকে সবার হাতেই ক্ষমতা রয়েছে”, বললেন পাই।
কোনও কারুশিল্পী, যিনি বেনারসী শাড়ি তৈরি করছেন, তিনি খুব সহজেই যোগাযোগ করতে পারছেন বেঙ্গালুরু নিবাসী কোনও ক্রেতার সাথে, যেটা কিছু দশক আগে ভাবাও যেতনা। এবং সংযোগের এই সহজলভ্যতা আরো অনেকরকম সুবিধা করে দিচ্ছে প্রভাবিত করছে শিক্ষা, বিনিয়োগ, বাজার সহ বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রেও।
বদলাচ্ছে জীবনযাত্রাও
স্টেম সেল সংক্রান্ত গবেষণার মধ্যে দিয়ে আয়ুষ্কাল বাড়ানোর স্বপ্ন দেখার যুগ এখন শেষ, এমনটাই মত পাইয়ের। বরং ‘রিনিউয়েবল এনার্জি’র ব্যবহার আজকের দিনে অনেক বেশি সহজ। বর্তমান সময় প্রত্যক্ষ করছে প্রযুক্তির এক অভূতপূর্ব অগ্রগতিকে।
আমরা স্বাগত জানাই টেকস্পার্ক এর উদ্যোগকে। নিবেদক – সিকুয়া ক্যাপিটাল, আইসিয়াইসিয়াই ব্যাঙ্ক, মানি অন মোবাইল, মাইক্রোসফট্, সিগনাল হিল, আই বি এম ব্লুমিক্স, পি ডব্লু সি, অ্যাটম টেক, টিমচ্যাট, কর্নাটক সরকার, ইন্টেল, র্যা বলার, ডেইলিহান্ট, রিভেরি, লগিনেক্সট অ্যান্ড পেইউবিজ; পার্টনার – ডাফ অ্যান্ড ফেল্পস, ট্যাক্স মন্ত্র, ডাইন আউট, এক্সোটেল, থ্রিসিক্সটি রাইড, যোগা বার, চায়ে পয়েন্ট, জি ডব্লু সি; আমাদের মিডিয়া পার্টনার – টিভি ৯, ফরচুন ইন্ডিয়া, রেড এফ এম এবং ডেকান হেরাল্ড।