ওর নাম আকাশ, ৫ বছরের ছেলে, শিল্প বানায়
মিডিয়ায় বিভিন্ন রিয়্যালিটি শো এর দৌলতে অনেক শিশু শিল্পীর প্রতিভা প্রকাশ পায়। তাদের কেউ অভিনয় করছে, কেউ বা নাচ, কেউ গান। কিন্তু এই ফোকাসের আড়ালে অনেকেই থেকে যায়। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও তারা প্রচারের আলোয় আসার সুযোগ পায় না। ইওর স্টোরির নজরে এমনই এক শিল্পী। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমুন্ডির কৃষ্ণপুর গ্রামের ৫ বছরের আকাশ বৈশ্য। এই বিস্ময় বালকের নিপুণ হাতে ফুটে ওঠে অপরূপ সব শিল্প। আজ আমরা শোনাবো সেই আকাশের গল্প।
বয়স মাত্র ৫। ক্ষুদে শিল্পী ইতিমধ্যেই আলোড়ন ফেলেছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। এই বয়সেই তার নিপুণ হাতে বাঁশের উপর অপূর্ব শিল্পকলা দেখে চোখ ফেরানো যায় না। বাবা ঝন্টু বৈশ্য এই শিল্পের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রথমে বাঁশ কেটে তাতে বিভিন্ন আকৃতি দেন। তাতে পালিশ করে চলে সৌন্দর্যায়নের কাজ। এরপর তার উপর ছেনি হাতুড়ির সাহায্যে বিভিন্ন নকশা তৈরি করা হয়। ছোট বয়স থেকেই বাবার এই কাজ দেখে নিজে রপ্ত করে নিয়েছে এই ছোট্ট আকাশ। প্রথম দিকে বাবার কাছ থেকে ছেনি হাতুড়ি নিয়ে নিজেই নকশা তৈরি করতো। ছোট বয়সেই এই প্রতিভা অবাক করে ছিল সকলকে।
আর্থিক অভাবে বাবা ঝন্টু বৈশ্যের পড়াশোনা বেশি দূর এগোয়নি। তাই তাঁর আশা ছেলে অনেক দূর পড়াশোনা করুক। সংসারে অভাব থাকলেও বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে মহেশপুরের কেজি স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করেছেন। স্কুলের পড়াশোনাতেও বেশ ভালো আকাশ। পড়াশোনার সাথে তার আগ্রহ ঐ শিল্পের দিকে। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ছেনি হাতুড়ি নিয়ে শুধু খুটখাট করাটাই তার খেলা। কোন রকম স্কেচ ছাড়াই ছোট্ট নিপুণ হাতে বাঁশের উপর ফুটিয়ে তোলে অদ্ভুত সব নকশা। ইতিমধ্যেই জেলা ছাড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পরেছে তার শিল্প প্রতিভার কথা। বাবার সঙ্গে বিভিন্ন শিল্প মেলায় হাজির হয় আকাশ। মেলা প্রাঙ্গণগুলিতে তার কাজ দেখতে ভিড় জমে যায়। বিক্রিও হয় প্রচুর। এই বয়সে এমন অদ্ভুত প্রতিভা দেখে সকলেই হতবাক।
ছেলেকে নিয়ে আনেক স্বপ্ন বাবা মায়ের। তারা চান ছেলে বড় শিল্পী হোক। তবে আর্থিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ছেলেকে বড় করতে কতটা লড়াই চালাতে পারবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তা তাদের। তবে আকাশের অন্তরের শিল্প সত্ত্বাই তাকে একদিন বড় করবে এটাই তাদের বিশ্বাস। ছোট্ট আকাশের জন্য শুভেচ্ছা রইলো টিম ইওর স্টোরির।