Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
ADVERTISEMENT
Advertise with us

দার্জিলিং নিয়ে তর্কপ্রিয় বাঙালির রসনায় Momo I am

দার্জিলিং নিয়ে তর্কপ্রিয় বাঙালির রসনায় Momo I am

Saturday July 29, 2017 , 4 min Read

Wow Momo র সাফল্য যেমন বহু উদ্যোগপতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে তেমনি, বাঙালিদের প্রিয় খাবারের তালিকাতেও মোমো এখন জায়গা করে নিয়েছে। মধ্য কলকাতায় একের পর এক মোমোর আউটলেট আপনি পাবেন। রাস্তার ধারেও কলকাতার স্ট্রিট ফুড হিসেবে গত চার পাঁচ বছরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মোমো। নানান রকম মোমো। তিব্বতি সংস্কৃতির এই অধ্যাসন এবং বিনা রক্তপাতে তিব্বতের এই কলকাতা দখল নিশ্চিত ভাবেই সাংস্কৃতিক ইতিহাসের একটি গবেষণার বিষয়। তবে খাবার মুখোরোচক হলে সে যে দেশরই হোক না কেন বাঙালির আদিখ্যেতার শেষ নেই। বাংলায় মোমোর এই রমরমাকে লাভের হিসেবে বদলে দেওয়ার এটিই যে সঠিক মওকা সেটা বুঝেছিলেন দার্জিলিংয়ের ছেলে রিভু ওয়াংদি। বন্ধু প্রভাকর ইয়মজোনকে নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার লেক গার্ডেন্সে ২০ সিটের ছোট্ট রেস্তারা খুলে ফেলেছেন। নাম দিয়েছেন Momo I Am সেখানে মোমো তো বটেই, তাছাড়াও পাওয়া যায় নানা তিব্বতি ও চিনা খাবার। স্বাদে, মানে, রেস্তোরাঁর পরিবেশে অল্প দিনেই হিট এই উদ্যোগ। গোলপার্ক, সল্টলেক, চিনারপার্ক, নিউটাউনও মাতিয়ে দিচ্ছেন ওরা। 

image


প্রতিযোগিতার মধ্যেও রিভু বাজার ধরে নিয়েছেন খুব সাফল্যের সঙ্গেই। দার্জিলিংয়ের তরুণ এই উদ্যোগপতি বলছিলেন, কলকাতা তাঁর প্রিয় শহর। কারণ এই শহর ওকে আশ্রয় দিয়েছে আর দিয়েছে ওর পরিশ্রমের ফল। অর্ডার নেওয়া থেকে খাবার দেওয়া, টেবিল পরিষ্কার সব নিজের হাতে করতেন একটা সময়। খাবারে খাঁটি চিনা স্বাদ, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তৈরি মেনু, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে রেস্তোরাঁর পরিবেশ। তাছাড়া পকেট ফ্রেন্ডলি দাম—এই সবকিছুই Momo I Am কে দ্রুত জনপ্রিয় করে তুলেছে। Momo I Am এর মতো মজার নামকরণে কোনও রহস্য নেই। হঠাতই হয়ে গেল। কিছু একটা আকর্ষণীয় নাম দিতে হতো। I Am Momo শব্দগুলি নিয়ে ভাবতে ভাবতে হয়ে গেল Momo I Am, হাসতে হাসতে শুরুর দিনগুলির গল্প শোনাচ্ছিলেন রিভু। দার্জিলিঙে তাঁর জন্ম ভিটে। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের খবর রাখেন তিনি। রাজনৈতিক ভাবে বেশ সচেতন রিভু। কিন্তু কলকাতাও তাঁর প্রিয় কারণ এটা তাঁর কর্মক্ষেত্র। তাই দুইই তাঁর চাই। 

সোজা সাপটা কথা। বাঙালি মোমো খেতে ভালোবাসে আর আমরা ভালো বানাতে পারি। তাই স্থির হয় কলকাতা যাব। বলছিলেন রিভু। কোথাও খুঁত রাখেননি। ২০ সিটের ছোট্ট একটা রেস্তোরাঁর জন্য যা প্রয়োজন তার থেকে বেশি টাকাই ঢেলেছেন ওরা। কোথাও কোনও ত্রুটি বরদাস্ত করেননি।

শুরু থেকে রিভু এবং প্রভাকরের মাথায় ছিল কম বয়েসীদের ভিড়টাকে তাঁদের রেস্তোরাঁ মুখী করতে হবে। সেকথা মাথায় রেখেই রেস্তোরাঁ সাজিয়েছিলেন। গ্রাফিত্তি আর্টিস্ট রিভু নিজে রেস্তোরাঁর দেওয়ালে স্ট্রিট আর্ট তুলে এনেছেন। রঙিন স্প্রে পেইন্টিং মন ভালো করে দেয়। আর মেনু! নামেই বোঝা যায় মোমোই রিভুদের রেস্তোরাঁর স্টার আইটেম। তিব্বতি খাবারের ফিউশন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফ্লেভার Momo I Am কে সবার থেকে আলাদা করে রেখেছে। ট্রাফেল অয়েল ভেজ ক্রিস্টাল ডাম্পলিং, ইন্দোনেশিয়ান গার্লিক পর্ক সালাড, কেনজাই ফ্রাইড চিকেন, চিকেন গ্রিন বেসিল রাইস কম্বোর মতো জটিল অপরিচিত মেনু হলেও দাম একেবারেই হাতের মুঠোয়। ভেজ অথবা চিকেন বাউস খাওয়া যেতে পারে। রিভু জানান ওই খাবারের উৎস তাইওয়ান। নরম গরম বানের মধ্যে চিকেন অথবা পর্কে ঠাসা, সঙ্গে মিষ্টিকুমরোর আচার আর হাতে তৈরি সস—একদম পয়সা উসুল। ভেজ চাইলে সবজির পুরে ঠাসা বান খেয়ে দেখুন। স্বাদ বদল হবেই। তারপর তো নানা রকমের মোমো এখানকার স্পেশালিটি। ঝোল সুপ মোমো খাওয়া যেতে পারে। নামে বাঙালি বাঙালি গন্ধ থাকলেও আসলে কিন্তু তা নয়। ভেজ, চিকেন অথবা পর্কের পুর পোরা মোমো থাই স্যুপে ডোবানো থাকে। খেতে পারেন হ্যাং ওভার মোমো। আদতে ভর্তা করা আলু পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম আর মসলাদার সসে নেড়ে নিলেই তৈরি হ্যাং ওভার মোমো। রিভু বলছিলেন, ‘এটা আসলে হ্যাংওভার ব্রেকফাস্ট। সারা রাত বন্ধুদের সঙ্গে হুল্লোর করে হ্যাং ওভার মোমো দিয়ে ব্রেকফাস্ট করলেই হ্যাং ওভার gone’।

শুধু গতানুগতিক প্যান ফ্রায়েড বা স্টিম মোমো নয় মোমো নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই চলেছেন রিভু। পর্কের নানা পদ নিজেদের রেসিপিতে তৈরি হয়। মসলা বাজার থেকে কেনা নয়, তৈরি হয় রেস্তোরাঁরই হেঁসেলে। আছে তিব্বতি থালির ব্যবস্থা। লেখা পড়তে পড়তে যদি Momo I Am খেতে যাবেন ঠিক করে ফেলেন তাহলে আরেকটা টিপস দিয়ে রাখি। Momo I Am এর স্পেশাল থুকপা মিস করবেন না। হাতে তৈরি নুডলস সঙ্গে চিকেন অথবা মাশরুমের হালকা স্যুপ, ছড়ানো থাকবে চিকেন অথবা পর্কের ছোট ছোট টুকরো, সেদ্ধ ডিমের ফালি আর হরেক রকম সবজি। উদর পূর্তি। পয়সা উসুল। দিল খুশ। ব্যাস আর কী চাই?