Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
ADVERTISEMENT
Advertise with us

ক্যালিফোর্নিয়ায় ছুটছে Nuro-র চালকবিহীন গাড়ি

ক্যালিফোর্নিয়ায় ছুটছে Nuro-র চালকবিহীন গাড়ি

Friday February 16, 2018 , 4 min Read

মানুষের সভ্যতা এগিয়েছে চাকা আবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছনর তাগিদ থেকে মানুষ আবিষ্কার করেছে একের পর এক যাতায়াতের মাধ্যম। আরও আরামদায়ক আর দ্রুতগামী হওয়ার প্রয়োজনীয়তায় দিনে দিনে উন্নত হয়েছে যানবাহন। সে আপনার ভারী সামগ্রী নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার তাগিদ হোক কিংবা আপনি সবান্ধবে বেড়িয়ে আসবেন বলে তাই প্রযুক্তিবিদেরা তৈরি করেছেন একটির থেকে আরও ভালো আরেকটি যান বাহন। কখনও রথে চড়েছে মানুষ কখনও এক্কা গাড়িতে, বাষ্পে চলা রেল গাড়ি আর আকাশে ওড়ার উড়ো জাহাজ। মানুষের বিবর্তনের ইতিহাসটা মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার বিবর্তন দিয়েই স্পষ্ট বোঝা যায়। আর আজ মানুষ স্বপ্ন দেখছে হাইপার লুপে চড়ার। কিন্তু মজার কথা হল যত সে গাড়ি চড়েছে তত সে উপলব্ধি করেছে গাড়ি চালানোয় মজা নেই। এটা প্রোডাক্টিভ কাজ নয়। অত্যন্ত মনঃসংযোগ প্রয়োজন পড়ে। যন্ত্রের মত নির্ভুল হতে হয়। নির্দিষ্ট যুক্তি মেনে চলতে হয়। আর মানুষ আবেগ নির্ভর প্রাণী। যত তার ব্যস্ততা বাড়ছে, ততই সে ক্রমশ রিস্ক সোসাইটির ভিতর প্রবেশ করছে। ততই তার মনের কোনে ক্লান্তি বিষণ্ণতা আর অহংবোধের আবেগ। যা তাকে বিপন্ন করে তুলছে প্রতিনিয়ত। ফলে গাড়ি চালানোর মুহূর্তে সব থেকে বেশি আবেগ মাথার ভিতর ঘুরপাক খায়। মাথার ভিতর খালি আনাগোনা করে হয় তার ব্যক্তিগত জীবনের আবেগ নয়তো তার কর্মজীবনের উদ্বেগ। কিন্তু গাড়ি চালানোর মুহূর্তে অন্য কোনও কথা ভাবা যদিও মানা। কিন্তু সব থেকে ভাবনা ঘিরে ধরে ওই নীরব সময়টাতেই। আর এখানেই সমস্যার গন্ধ পেয়েছে গুগল থেকে শুরু করে বিশ্বের তাবড় টেকনোলজি সংস্থা। তৈরি হয়েছে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের প্রয়োগে তৈরি হয়েছে এমন সাইকেল যাতে চড়ে বসলে সাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার ভয় তো থাকবেই না বরং চালাতেও হবে না। সে চলবে নিজস্ব ছন্দে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে ভর করে। রাস্তার সিগনাল মেনে। নিয়ম মেনে। আপনি শুধু বসে থাকবেন আর নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে। এরকম মালবাহী গাড়িরও পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে। উবের ব্যবহার করেছে এই ধরণের মালবাহী যান। এবার এরকমই একটি প্রয়োগ হল সম্প্রতি। রীতিমত চালু হয়ে গেল ক্যালিফোর্নিয়ায়। কিন্তু বিশাল ট্রাক বা মালবাহী বড় গাড়ি নয়। এ শুধু মফঃস্বলের রাস্তার জন্যে তৈরি হওয়া একটি মাঝারি মাপের চলমান কেবিন।

image


এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় জিনিসপত্র নিয়ে যেতে গেলে মানুষের স্বাভাবিক সহজাত আলসেমিগুলোকে প্রশ্রয় দেওয়ার যন্ত্র। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার পরিষেবা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতেও সুবিধে হবে এমন যান চালু হল সম্প্রতি। এসেছে Nuro, চালক বিহীন গাড়ি।

চালক বিহীন এই চারচাকার লঞ্চ দেখার সৌভাগ্য হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া-বাসীর। দেখতে মনে হবে চাকার ওপর বিরাট কেবিন, অনেকটা রোবটের মতো। Nuro নামে একটি স্টার্টআপই চালক বিহীন এই গাড়ির তৈরি করেছে। উদ্দেশ্য হল পিৎজা, মুদি-মাল অথবা লন্ড্রির কাপড় চোপড় ঠিক ঠিক ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া। অনেক সময় আমরা অনলাইনে কেনাকাটা করি। বাইকে অথবা গাড়িতে করে সেইসব জিনিসপত্র ডেলিভারির জন্য হয়ত আর মানুষের প্রয়োজন পড়বে না। চাকার ওপর কেবিন ডিজাইন করার সময় SUV এর উচ্চতা মাথায় রাখা হয়েছে। অবশ্য প্রস্থের দিকে Nuro অনেক বেশি উপযোগী। বৈদ্যুতিন এই গাড়ির ভেতর চারটি আলাদা কামরা রয়েছে। রেফ্রিজারেটর, কুকিং অথবা স্টোরেজ সবকিছুর জন্য আলাদা কামরা ব্যবহার করা যেতে পারে। সাধারণ গাড়ির এক তৃতীয়াংশ ওজন এর আরেকটা সুবিধা। এই গাড়ি সহজে মফস্বল এবং শহরতলির নানা রাস্তায় নিশ্চিন্তে চললেও হাইওয়েতে একদম মানা।

Nuro নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কো—ফাউন্ডাররা ২০১৬ সালে গুগলস সেলফ ড্রাইভিং কার প্রোগ্রামের মোটা বেতনের চাকরি ছেড়ে দেন। মন দেন নিজেদের স্বপ্ন সফল করার কাজে। ক্যালিফোর্নিয়ায় Nuro এর লঞ্চের আগে আইনি জটে নানা সমস্যা তৈরি হয়। কারণ টেস্ট ড্রাইভ ছাড়া কোনও গাড়ি চলার অনুমতি দেওয়া হয় না এখানে। আশার আলো একটাই Nuro সওয়ারি বিহীন। ফলে চালক-হীন এই রোবট গাড়ির অনুমতি মেলার আলোর রেখা এখনও মিলিয়ে যায়নি। তাছাড়া আকারের সুবিধার জন্য Nuro সহজে রাস্তা এবং পথচারীদের বুঝে নিতে পারে। তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে পথচারীকে বাঁচিয়ে আশেপাশের কোনও গাছে ধাক্কা মেরে সামাল দিতে পারে। যদিও কোনও পথচারী বা রাস্তা ব্যবহারকারী কোনওভাবে Nuro এর সংস্পর্শে আসার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না কারণ যানটির গতিবিধি আগেভাগে গায়ে লাগানো পর্দায় ভেসে ওঠে। কো ফাউন্ডার ফার্গুসন জানাচ্ছেন, কোনওরকম ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে অন্য গাড়ির চালকদের Nuro তার পরবর্তী মুভমেন্ট জানিয়ে দেয়।

কিন্তু বাড়তে থাকা জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যন্ত্র যদি কাজ কেড়ে নেয় তাহলে বিষয়টা উদ্বেগের। ফার্গুসন অবশ্য তা মানতে নারাজ। তাঁর মতে, উল্টে বাজারে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে Nuro। যেদিকে এগোচ্ছে একদিন হয়ত দেখা যাবে বাড়ি বাড়ি জিনিসপত্রের ডেলিভারি দিতে রাস্তার দখল নেবে Nuro রা। খুব একটা মন্দ হবে না তাহলে।