JIS বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হল E-Cell

JIS বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হল E-Cell

Sunday March 25, 2018,

3 min Read

এবার জে আই এস ইউনিভার্সিটিতেও শুরু হল আন্ত্রেপ্রেনিওরশিপ ডেভেলপমেন্ট সেল। ১৫ মার্চ ২০১৮। ওয়াধানি ফাউন্ডেশনের সৌজন্যে জে আই এস ইউনিভার্সিটি শুরু করল তাদের এই নতুন পথচলা। যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক দর্শনেই রয়েছে উদ্যোগের প্রাধান্য। ফি বছর স্কিল এক্সের আয়োজন করা হলেও এবার পৃথক আন্ত্রেপ্রেনিওরশিপ ডেভেলপমেন্ট সেল তৈরি হল এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

image


এই উপলক্ষে আন্ত্রেপ্রেনিওরশিপ কেন প্রয়োজন তা নিয়ে আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন ক্যাট আইচ সংস্থার কর্ণধার, ইন্দ্রনীল আইচ। ওয়াধানি ফাউন্ডেশনের রিজিওনাল ম্যানেজার শুভব্রত ভট্টাচার্য। স্টার্টফেড-এর কোফাউন্ডার হিন্দোল গোস্বামী। আলোচনায় উদ্যোগ নেওয়ার নানান ধাপ নিয়ে বিশদে ব্যাখ্যা করেন উদ্যোগপতি ইন্দ্রনীল আইচ। তিনি বলেন যত সময় এগোচ্ছে ততই উদ্যোগের দুনিয়ায় প্রবেশ করা আর ইচ্ছে অনিচ্ছার বৃত্তে আবদ্ধ থাকছে না। বরং আবশ্যকতা হয়ে উঠছে। কলেজ ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে ছাত্ররা চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করলেও চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রতিনিয়ত কমছে। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন কর্মসংস্থানের বৃদ্ধির হার মাইনাসে রয়েছে। ফলে কাজের অবকাশ তৈরি করাটা বেশি জরুরি। ছাত্রাবস্থায় উদ্যোগের ঝুঁকি না নিতে শিখলে গোটা কর্মসংস্থানের পরিকাঠামোই বিপন্ন হয়ে পড়বে। শুভব্রত বাবুও জোর দেন আন্ত্রেপ্রেনিওরশিপ বা উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর। এবং উদ্যোগের মানচিত্রে বাংলার পট যে বদলাচ্ছে সেকথা উল্লেখ করেন বাংলা ইওরস্টোরির সম্পাদক হিন্দোল গোস্বামী।

আলোচনায় উঠে আসে বাঙালি জাতি সম্পর্কে পূর্বধারণার প্রসঙ্গও। বাঙালির ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা নিয়ে নানান ভ্রান্ত ধারণা, এবং মনগড়া মূর্তি রয়েছে। সেই ধারণা আদতে কতটুকু বাস্তব তা নিয়ে বলতে গিয়ে হিন্দোল বাবু বলেন, বাংলার মানুষের মন মানসিকতা, সৃজনশীলতা, পছন্দ অপছন্দ, ব্যবসা বাণিজ্য এসব নিয়ে কম হাসাহাসি হয় না। যারে দেখতে নারি তার চরণ বাঁকা গোছের মন্তব্য আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়ায়। বাঙালিদের নিয়ে যেমন তেমনি পাঞ্জাবিদের নিয়েও সমান তামাশা চলে। সান্টা বান্টার অলীক চরিত্র তৈরি করে খিল্লি হয়। এর নেপথ্যে ঔপনিবেশিক অভিসন্ধির উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুটো শক্তিশালী জাতিকে এভাবেই দুর্বল করে দিতে চাওয়া হয়েছে। এবং এটা ঐতিহাসিক সত্য। সেই লেগাসিই চলছে। ভুলে গেলে চলবে না বাংলার সর্বনাশের সূত্রপাত ইংরেজ আমলেই। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে যখন বাংলার এক কোটি মানুষ অনাহারে মরছিল, তখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার কর আদায়ে ব্যস্ত। এই তো বাংলার ইতিহাস। সেই একই ভাবে দুটো জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে দেশভাগের আয়োজন করা হয়েছে। অস্থির রাজনীতির ভিতর দিয়ে গিয়েছে এই দুই জাতি। রাজনৈতিক অস্থিরতা ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতাকে ব্যাহত করেছে বলে মনে করেন উদ্যোগপতি ইন্দ্রনীল আইচও। তিনি সর্দার যোধ সিংকে স্মরণ করে বলেন। দেশভাগের বিপন্ন সময়ে পাঞ্জাব থেকে কলকাতায় এসেছিলেন জেআইএস গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সর্দার যোধ সিং। একটা গরু নিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ সাম্রাজ্য খাঁড়া করার হিম্মত দেখিয়েছিলেন এই উদ্যোগপতি। তার প্রতিষ্ঠানে এ যেন একটি সেতু বন্ধন হল। একটি প্রদীপ থেকে অনেক প্রদীপ জ্বলে ওঠার মতো উদ্যোগের দুনিয়ায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি হল বলে মনে করেন এই তরুণ উদ্যোগপতি। অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর বি সি মাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান প্ৰফেসর শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।