Brands
Discover
Events
Newsletter
More

Follow Us

twitterfacebookinstagramyoutube
Youtstory

Brands

Resources

Stories

General

In-Depth

Announcement

Reports

News

Funding

Startup Sectors

Women in tech

Sportstech

Agritech

E-Commerce

Education

Lifestyle

Entertainment

Art & Culture

Travel & Leisure

Curtain Raiser

Wine and Food

YSTV

ADVERTISEMENT
Advertise with us

গানের তরি ভাসিয়ে দিয়ে মনোজ কোথাও পৌঁছবেন

গানের তরি ভাসিয়ে দিয়ে মনোজ কোথাও পৌঁছবেন

Tuesday February 09, 2016 , 3 min Read

বাবা নিরঞ্জন রায় পেশায় কৃষক। ছোট্টবেলায় মাকে হারিয়েছেন মনোজ। চার সন্তানকে বড় করার চাপ। আর্থিক অস্বচ্ছলতা সত্ত্বেও মনোজের শিল্পীসত্ত্বাকে উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন কৃষক বাবা। 

image


এক দিকে অসম্ভব কৃচ্ছসাধন করেছেন। অন্যদিকে ছেলেকে এগিয়ে দিয়েছেন তাঁর স্বপ্নের দিকে। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির ১৩ নং ওয়ার্ডের শ্রীনগর কলোনির মনোজ রায়। বাবার জন্যেই কূপমণ্ডুকতা শেখেননি। ছোটবেলায় অ্যাথলিট হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। রাজ্যস্তরে ফুটবলও খেলেছেন। একইসঙ্গে, সঙ্গীতের প্রতিও অমোঘ টান ছিল। বছর ছয়েকের ছেলে মুখে মুখে সুর ভাজতো। গানের কলিতে ঘর বারান্দা কলোনির গলি মম করত। ওদের কুঁড়ে ঘরের পাশ দিয়ে গেলেই গান বাজনার আওয়াজ পাওয়া যেত।

একবার মামার কাছ থেকে একটা মাউথ অরগ্যান উপহার পায়। সেই বিদেশি বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে দিয়েই সুর তুলেছিল মনোজ। কেউ শেখায়নি। শিক্ষক রাখার পয়সা কোথায়! নিজের এলেমেই মাউথ অরগ্যানে পারদর্শী হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে এলাকার একাধিক অনুষ্ঠানে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠে মনোজ। মাধ্যমিক পাশ করার পর হাতে পান গিটার। কিন্তু গরিব কৃষক বাবার পক্ষে মাস্টার রেখে গিটার শেখানোর সামর্থ্য ছিল না। 

তো কি! সুর ওর স্নায়ুতে এমন জাল বুনেছিল যে নিজে নিজেই স্ট্রিং নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে। মাত্র ৬ মাসে তাতেও বেজে উঠল সুর। এতটাই দক্ষ হয়ে উঠলেন যে, পাড়ার লোকেরা কচিকাচাদের তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠাতে শুরু করে দিলেন। এবার তাঁর সুরকার হওয়ার সাধনা শুরু। তখন দু-একটা গানের কথা আর সুর রচনা শুরু করেন মনোজ। একাধিক অনুষ্ঠানে বাদ্য‌যন্ত্রে নিজের গানই পরিবেশন করতে থাকেন। প্রশংসাও কুড়োতে থাকেন।

কিন্তু প্রথাগত শিক্ষা ছাড়া এভাবে একের পর এক মাইলস্টোন অতিক্রম করা সহজ নয়। “ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত নিয়ে চর্চার কথা কখনও ভাবিনি। ভাবার স্পর্ধা করিনি কারণ আমি জানতাম এভাবে হবে না। এই নিয়ে গোটা ভারত জুড়ে প্রচুর চর্চা হয় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন। তাই পাশ্চাত্য সঙ্গীত নিয়ে চর্চা শুরু করলাম।” বলছিলেন মাইকেল জ্যাকসন, বব ডিলান, জিমি হেনড্রিক্সের গান শুনে শুনে বড় হওয়া মনোজ।

কিছুদিন বাদে স্থানীয় যুবকদের নিয়ে একটি ব্যান্ডও গড়েন। কিন্তু খুব বেশিদূর এগোয়নি। “আসলে তাঁদের সেই মানের প্রতিভা বা একাগ্রতা ছিল না। আর এই প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যান্ডের ধারণাও তখন নতুন। ফলে যা হওয়ার তাই হল। কিন্তু ব্যান্ডের বাকি সদস্যরা নিজেদের কাজে মশগুল হয়ে গেলেও আমি কিন্তু চর্চা ছাড়িনি।”

২০০৯ সালে প্রথম অ্যালবাম বের করলেন মনোজ। নাম দেন ‘ঘুমাবো না’। সেই অ্যালবামের প্রতিটি গানের সুর তিনিই বেঁধেছিলেন। এরপর নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করতে টলিউডের পরিচালকদের দ্বারস্থ হন। কিন্তু কেউ সুযোগ দেননি। তবুও হাল ছাড়েননি মনোজ। একবার ওয়াটসঅ্যাপে পরিচালক শিরাজ হেনরিকে নিজের গানের অডিও পাঠান। শিরাজ তাঁকে বম্বে ডেকে নেন। এরপর আরও দু-একটি সিনেমায় গান গেয়েছেন। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। হাতে বেশ কয়েকটি কাজ রয়েছে বলিউডের। কথা চলছে ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের সঙ্গে।

এখনও অনেক পথ বাকি। স্বপ্ন, বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। কাজ করবেন টলিউডেও। তাঁর মতোই গরিব ঘর থেকে, গ্রাম থেকে উঠে আসা প্রতিভাধরদের প্ল্যাটফর্ম দিতে চান মনোজ। সেজন্য গান ও বাদ্যযন্ত্রের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে চান। এরজন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। 

আশা ছাড়ছেন না।স্থানীয় বেশ কয়েকজন ছেলেমেয়েকে ইতিমধ্যেই তালিম দিতে শুরু করে দিয়েছেন আর শামুকের মতো ধীরে ধীরে এগোচ্ছেন সেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে।